JU Student Death: ‘মা আমার ভীষণ ভয় করছে, বাড়ি নিয়ে যাও’, কেন বলেছিল স্বপ্নদীপ? মৃত্যুতে একাধিক প্রশ্ন..


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: জয়েন্টে চান্স পেয়েছিল। কিন্তু সেদিকে যায়নি। বাংলা ভালোবাসে বলে যাদবপুরে বাংলা নিয়ে ভর্তি হয়েছিল স্বপ্নদীপ। সেই যাদবপুরে ভর্তির ২ দিনের মধ্যেই ছেলের রহস্যমৃত্যু। কী করে? কেন? কী ঘটেছে? উত্তর হাতড়ে বেড়াচ্ছে স্বপ্নদীপের বাবা-মা। ইতিমধ্যেই স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে যাদবপুর থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বাড়ির লোকের বারণ সত্ত্বেও বাংলা নিয়ে পড়বে বলে যাদবপুরে ভর্তি হয়েছিল আদতে বিজ্ঞানের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডু। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর কী ঘটেছে স্বপ্নদীপের সঙ্গে? তা নিয়েই বিস্তর ধোঁয়াশা, জট। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় পরিবারের তরফে যাদবপুর থানায় দায়ের করা হয়েছে এফআইআর।

স্বপ্নদীপের বাবা জানান, মায়ের সঙ্গে শেষবার যখন স্বপ্নদীপের কথা হয়, তখন সে বলেছিল, ‘মা আমার ভীষণ ভয় করছে, আমায় বাড়ি নিয়ে যাও।’ কিন্তু কীসের ভয়? কী নিয়ে ভয়? স্বপ্নদীপের সেই ভয়ের কারণ খুঁজছে এখন পরিবার! জানা গিয়েছে, মায়ের সঙ্গে মৃত্যুর কিছু আগেই ফোনে কথা হয়েছিল। কী ধরনের কথা হয়েছিল তখন? কী কী অসুবিধার কথা মাকে জানিয়েছিল সে? পুলিস সূত্রে খবর, হস্টেলে থাকতে খুব অসুবিধা হচ্ছে বলে মাকে জানিয়েছিল স্বপ্নদীপ। একইসঙ্গে সে বলেছিল যে তার ভয় করছে! মাকে ফোনে জানিয়েছিল, হস্টেলে থাকতে তার ভালো লাগছে না। ভয় লাগছে। সোম, মঙ্গল, বুধ হাজিরা খাতায় স্বপ্নদীপের নাম রয়েছে ঠিকই। কিন্তু স্বপ্নদীপ মনমরা ছিল। চুপচাপ ছিল। কিছু বন্ধু জিজ্ঞাসা করেছিল, কী হয়েছে? উত্তর এড়িয়ে গিয়েছে স্বপ্নদীপ। তারপরই মাকে কাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত একাধিকবার ফোন করেছিল। শেষে রাতে হস্টেলের ৩ তলার ছাদ থেকে পড়ে রহস্যমৃত্যু স্বপ্নদীপের! 

আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। হস্টেলে থাকতে কীসের অসুবিধা হচ্ছিল স্বপ্নদীপের? কীসে ভয় পাচ্ছিল স্বপ্নদীপ? কীসের ভয়ে ছিল সে? কেন তার ভয় করছিল? তাকে কি কেউ বা কারা ভয় দেখাচ্ছিল? আর এইসব প্রশ্নের প্রেক্ষাপটেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না স্বপ্নদীপের Ragging-এর শিকার হওয়ার সম্ভাবনার কথা। জানা গিয়েছে, ফেসবুক ডিঅ্যাক্টিভেট করে দিয়েছিল স্বপ্নদীপ। খুব সম্ভবত কাল বিকেল নাগাদ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করা হয়। কারণ কী? তদন্তে সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। স্বপ্নদীপের মামা জানালেন, ‘ক্লাস নিয়ে সমস্যা নেই। ক্লাস ভালো লাগছিল। কিন্তু বিকেলের পর একাধিকবার মাকে ফোন করে বলে, ‘মা আমার ভয় লাগছে। আমি থাকতে পারছি না।’ তবে তিনি উড়িয়ে দেন স্বপ্নদীপের সুইসাইড করার সম্ভাবনাও। বলেন, ‘কীসের সুইসাইড? এতো ভালো ছেলে সুইসাইড করে নাকি?’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘এর পিছনে অন্য কিছু আছে। র‌্যাগিং-এর সন্দেহ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’

সাড়ে ৯টা নাগাদ শেষবার মায়ের সঙ্গে কথা হয় স্বপ্নদীপের। ছেলের ভয় পাওয়ার কথা মাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। তারপর থেকে বহুবার ছেলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন মা। কিন্তু ছেলে আর ফোন রিসিভ করেনি। এমনটাই দাবি মামা অরূপ কুণ্ডুর। র‌্যাগিং-এর শিকার হওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পার্থ রায়। তিনি বলেন, ‘শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রায় নগ্ন ছিল। তারউপর গতকাল হস্টেলে পাস আউট স্টুডেন্টরাও ছিল।’ একইসঙ্গে রিসার্চ স্কলার অ্যাসোসিয়েশনও বিবৃতি জারি করে তাদের বক্তব্যে জানিয়েছে-

নদিয়ার হাঁসখালি থানা এলাকার বগুলা কলেজ পাড়ায় বাড়ি স্বপ্নদীপের। বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু কো-অপারেটিভ ব্যাংকের গাজনা শাখার কর্মী। মা স্বপ্না কুণ্ডু আইসিডিএস কর্মী। দুই ছেলের মধ্যে স্বপ্নদীপ বড় ছেলে। ছোট ছেলে রত্নদীপ স্কুলে পড়ে, মাধ্যমিক দেবে। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল স্বপ্নদীপ। স্বপ্নদীপের মৃত্যুতে শোকাহত এলাকার সকলে। সকলেই চাইছেন স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুর দ্রুত কিনারা হোক। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।

আরও পড়ুন, Jadavpur Student Death: বাঁচানো গেল না স্বপ্নদীপকে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে মৃত্যু পড়ুয়ার

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *