নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর শেষকৃত্যের আগে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর বাবা, বারবার কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে অভিযোগ করেন, ‘ছেলেটাকে রড দিয়ে মারা হয়েছে। ওর গোটা গায়ে দাগ।’ স্বপ্নদীপের মামাও জানিয়েছিলেন একই অভিযোগ। মৃতের পরিবারের অভিযোগ এক বা একাধিক জন এই অপরাধে যুক্ত।
প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী? তার খোঁজে ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই যাদবপুর মেন হস্টেলের আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। বিল্ডিংয়ের যে তলা থেকে স্বপ্নদীপ পড়ে গিয়েছিল বলে দাবি, সেই ফ্লোরের সমস্ত আবাসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জয়েন্ট সিপি ক্রাইম শঙ্খদীপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, প্রত্যেকে সহযোগিতা করেছেন। পরিবারের সন্দেহের ভিত্তিতে রাতভর হস্টেলের ১০ -১২ জন আবাসিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রত্যেকের বয়ান একে অপরের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের ধারণা, এই ঘটনায় এক বা একাধিক জনের হাত থাকতে পারে। বিবস্ত্র অবস্থায় স্বপ্নদীপের আহত দেহ মেলাতেও উঠছে প্রশ্ন।
স্বপ্নদীপের পরিবার দাবি করেছে, ঘটনার দিন সন্ধেবেলা একাধিক বার বাড়িতে ফোন করেছিল স্বপ্নদীপ। বাবা ও মায়ের কাছে জানিয়েছিলেন, তাঁর খুব ভয় করছে। সে বাড়ি ফিরতে চায়। একবার ফোনে জানান, সে খুব চাপে আছে। দেখা হলে অনেক কথা বলার আছে। সে সব বলবে বলেও জানায়। কিন্তু সেকথা আর বলার সুযোগ মেলেনি। রাত ৯টার পর থেকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি স্বপ্নদীপকে। নিহতের মামা জানায়, রাত সাড়ে বারোটার পর হস্টেল থেকে এক সিনিয়র ফোন করে জানায় স্বপ্নদীপ ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে। সেই সিনিয়রই ঘর না পাওয়ায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল স্বপ্নদীপকে, জানান তার মামা।
অন্যদিকে সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, উপর থেকে নীচে পড়ার জেরে আঘাতের ফলেই মৃত্যু হয় স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর। জানা গিয়েছে, তার মাথায় এক বড় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই আঘাতের কারণেই হয় মৃত্যু। তবে পারিপার্শ্বিক প্রমাণও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।