বিংশ শতাব্দীতেও অধিকাংশ মানুষ ক্ষুধার সঙ্গে খুব পরিচিত। বর্ধমান জেলার কালনা এক নম্বর ব্লক ধর্মডাঙ্গার একটি পরিবারের সঙ্গে ওতপ্রত ভাবে জড়িত ক্ষুধার যন্ত্রণা। পুত্র সন্তান হারা দেবী ধারা বাজার থেকে উচ্ছিষ্ঠ সবজি এনে বিনা তেলে কাঠের জালে রান্না করেন। অসুস্থ স্বামীর মুখে তুলে ধরছেন খাবার। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এইভাবে পরিবারটি জীবন ধারণ করে চলেছে।
১০ বছর ধরে প্যারালাইসিস হয়ে পড়ে আছেন দেবী ধারার স্বামী সোনা ধারা। স্বামীকে সুস্থ করার জন্য ওষুধ খাওয়ানো যেন এক প্রকারের বিলাসীতা। এই পরিবারটিতে এখনও পর্যন্ত কোন সরকারি সুযোগ-সুবিধা সেভাবে পাইনি বলে দাবি। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর জনসাধারণের স্বার্থে লক্ষী ভাণ্ডার থেকে বৃদ্ধ ভাতা, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড।
এই প্রকল্প গুলো থেকে এই পরিবারটি এখনও পর্যন্ত বঞ্চিত। বিনা বিদ্যুতে দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে রয়েছে পরিবারটি। কেরোসিন তেল কেনার মতন ক্ষমতা নেই তাঁদের। অন্ধকারের মধ্যেই জরাজীর্ণ স্বামীকে নিয়েই থাকতে হয়। বাড়িতে কল থাকলেও জলের ব্যবস্থা নেই। পরনের কাপড়টুকু কেনার পয়সা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়।
এক প্রকার বলতে গেলে পরিবারটি অবহেলিত হয়ে আসছে দীর্ঘ বছর ধরে। মানবিকতার খাতিরে পাড়ার প্রতিবেশী কিছুটা সাহায্য করলেও তা আর কতদিন করবে? দেবী ধারার পাঁচটি পুত্র সন্তান ছিল তিনটি পুত্র সন্তান ছোটবেলাতেই মারা যায়। আরেকটি পুত্র সন্তান কয়েক বছর আগে পাঁচিল চাপা পড়ে মারা যান। আরেকটি পুত্র সন্তান কয়েক বছর ধরে নিরুদ্দেশ। তার খোঁজ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এক প্রকার অনাহারে দিন কাটছে বলা চলে ধারা পরিবারে। সরকারের কাছে দেবী ধরা অনুরোধ করেন তাঁকে সাহায্য করার জন্য। পুরো ঘটনাটি এক নম্বর ব্লকের বিডিও সেবন্তী বিশ্বাস জানার পর পরিবারটিকে সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দেন। তাঁদের যাতে কোনও ভাবে সরকারি সাহায্য পৌঁছে দেওয়া যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান তিনি।