ধৃত ব্যক্তির নাম অশোক মুদুলী ও সুরেন্দ্র কুমার ঢল। দু’জনে পোড়া মঙ্গলা হাটের মুটিয়াদের সর্দার। এরাই হাটে আগুন ধরিয়েছিল বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ। CID তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আগুন যে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তা অনেকটাই নিশ্চিত বলে দাবি। ফরেনসিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, প্রায় আট বিঘা জমির ওপর এই হাটে পাঁচ জায়গায় আগুনের উৎস পাওয়া যায়।
আগুন লাগানোর জন্য তরল দাহ্য পদার্থ ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটে কুড়ি জুলাই রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ। ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে CID তদন্তভার নেয়। গ্রেফতার করা হয় নিজেকে হাট মালিক বলে দাবি করা শান্তি রঞ্জনদেকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন যে মুটিয়া সর্দাররা এই আগুন ধরিয়েছে।
সেইমতো গতরাতে দুই মুটিয়া সর্দার অশোক ও সুরেন্দ্রকে গ্রেফতার করে সিআইডি। আজ আদালতে পেশ করে তিনদিনের নিজেদের হেফাজতে নেয় সিআইডি। তদন্তে জানা যায় ঘটনার একদিন আগে এক মহিলার সাথে শালিমার থেকে ট্রেনে পুরী চলে যান শান্তি রঞ্জন দে। সেখানে তার একটি হোটেল রয়েছে। আগুন লাগার পর অশোক ও সুরেন্দ্র ফোন করেছিলো শান্তি রঞ্জনকে। কল ডিটেল ধরে সেই সূত্র পাওয়া গেছে।
অগ্নিকাণ্ডে শান্তি রঞ্জনের অফিস পুড়ে গিয়েছিল। আসলে এটা পরিকল্পনা করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ পরবর্তীকালে শান্তি রঞ্জনের বলতে সুবিধা হতো যে দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্র পুড়ে গিয়েছে। যদিও নিজে ওই হাটের মালিক শান্তি রঞ্জন নয় বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তিনি দেখাশোনা করতেন কার্যত গাজোয়ারি করে।
সব মিলিয়ে অগ্নিকাণ্ডের অন্তর্ঘাতের তথ্য উঠে আসছে। কিন্তু কী উদ্যেশ্যে হাটে আগুন লাগানো হল? তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে এই হাটকে আন্তর্জাতিক মানের হাট তৈরির পরিকল্পনা ছিল শান্তি রঞ্জনের। কারণ, দেশের বিভিন্ন রাজ্য ছাড়াও চীন, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড থেকেও এখানে জামা কাপড় কিনতে আসেন বহু মানুষ। নতুন করে দোকান বানাতে পারলে মোটা টাকায় দোকান বিক্রি করা যাবে। পুরানো ব্যবসায়ীদের ভাড়া ছিল খুবই কম। তারা উঠতেও চাইছিলেন না। তাই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।