Child Marriage : অজানা নম্বর থেকে ফোন! খবর পেয়েই বাল্য বিবাহ রুখলেন প্রধান শিক্ষক – barjora krishnanagar high school headmaster stopped child marriage


কিছুক্ষণ আগেই স্কুল থেকে ফিরেছেন প্রধান শিক্ষক, শহর জুড়ে তুমুল বৃষ্টি। রাত প্রায় সাড়ে আটটা হবে। এমন সময় বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়ার কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র দরদী প্রধান শিক্ষক বিপ্লব চক্রবর্তীর কাছে একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন আসে। ‘স্যার আপনার স্কুলের ১৬ বছর বয়সী এক ছাত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্যার কিছু একটা করুন’!

এই বলেই ফোনটা কেটে যায়। এই ঘটনায় যথেষ্ট বিচলিত হয়ে ওঠেন প্রধান শিক্ষক বিপ্লব বাবু। আর কালবিলম্ব নয়, তিনি ফোন করেন তাঁর স্কুলের শিশু সংসদের প্রধানমন্ত্রী, বড়জোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আর বড়জোড়া থানায়। পিতৃতুল্য স্যারের ফোন পেয়েই সহপাঠিনী বন্ধুর বাড়িতে পৌঁছে যায় কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিশু সংসদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অন্যান্য ছাত্রীরাও।

WB Child Rights Commission : স্কুল পড়ুয়াদের গাঁজা বিক্রি, রিপোর্ট চায় শিশু কমিশন
কন্যাশ্রী দিবসের ঠিক আগের দিনই এই ঘটনা ঘটে। তারা যখন পৌঁছয়, গিয়ে দেখে কনের বেশে সাজানো হয়েছে তাদেরই সহপাঠিনীকে। এই বিয়ে নিয়ে তাদের বিরোধিতার মাঝে হাজির হয় পুলিশও। অবস্থা বেগতিক বুঝে বেপাত্তা হয়ে যায় নাবালিকার বাবা, এমনকি পুরোহিতও। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ওই নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করতে বাধ্য হন তার পরিবারের লোকেরা।

অনেকখানি তৃপ্তি আর ভালো লাগাকে সঙ্গী করে যখন শিশু সংসদের সদস্যারা যখন বাড়ির পথ ধরছে, ঠিক তখনই বিফল মনোরথে বৌ ছাড়াই একা একাই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে বাধ্য হন বর বাবাজীবনও। তাঁর শিশু সংসদের এই কৃতিত্বে গর্বিত প্রধান শিক্ষক বিপ্লব চক্রবর্তী নিজেও।

Uttar 24 Pargana : প্রাক্তন প্রেমিকার বাড়ির পিছনে যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার! কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ
এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাড়ি ফেরার সময় হঠাৎ করেই একজন ফোন করেন। তাঁর নম্বর যেমন অচেনা, ঠিক তেমনি তাঁর কণ্ঠস্বরও আমি চিনি না। তিনি কোথা থেকে নম্বর পেলেন সেটাও আমার জানা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘খবর পেয়েই আমার মনে ভয় ধরে। কারণ সেই ছাত্রীর বাড়ি আমি চিনি না। তাই বেশ কিছু জায়গায় ফোন করে তড়িঘড়ি সেখানে যেতে বলি। আর তাতেই কাজ হয়। নাবালিকার বিয়ে আটকে যায়।’

Sukant Majumder : ‘বিচারের দাবিতে ধরনায় বসছে BJP’, যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ঘোষণা সুকান্তর
প্রধান শিক্ষক সহ সকলের এই তৎপরতাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন এলাকার মানুষ। উল্লেখ্য, পুলিশ, প্রশাসনের লাগাতার প্রচার আছে। আছে কন্যাশ্রী, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নজরদারিও। তার পরেও জেলায় বাল্যবিবাহের কমতি নেই। রাজ্যে এখনও চলছে নাবালিকার বিয়ে। সেই সংখ্যাটাকে শূন্যে নামিয়ে আনতে ‘বাল্যবিবাহ মুক্ত’ জেলার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। তাতেও যে একশ্রেণীর মানুষের যে এই বিষয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই, তা এই ঘটনা থেকেই বোঝা যাচ্ছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *