এই বিষয়ে তেলিগড়া মনসা পুজো কমিটির এক উদ্যোক্তা বলেন, ‘দুর্গাপুজো, কালীপুজো, সরস্বতী পুজো সবই এখানে হয়ে থাকে। কিন্তু এই এলাকা ও এলাকার মানুষদের কাছে মনসা পুজোর আবেগ আলাদা মানে বহন করে। জেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষজনের কাছে মনসা পুজো অনেক বড়। সেকথা মাথায় রেখেই আমাদের এই বড় বাজেটের পুজো করা হয় প্রত্যেক বছর’। মনসা পুজোর পাশাপাশি এদিন বাঁকুড়া জেলায় হয় ‘রান্না পরব’, স্থানীয়ভাবে যা ‘পান্তা ভাত’ হিসেবে পরিচিত।
শ্রাবণ সংক্রান্তিতে রান্না করে তা ভাদ্রের প্রথম দিনেই খাওয়া হয়। সবমিলিয়ে মনসা পুজো উপলক্ষ্যে আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন বাঁকুড়ার মানুষ। মা মনসার দুই রকম রূপ একটা হল লৌকিক রূপ অন্যটি হলো পৌরাণিক রূপ। কাব্য অনুসারে মনসাকে শিবের কন্যা হিসেবে পুজো করা হয়। কিন্তু অভিজাত হিন্দু সমাজে তখনও তার পুজোর প্রচলন ছিল না, মূলত জেলে কৃষক সম্প্রদায়ের মানুষই তার পুজো করত। মা মনসার জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে অনেক পৌরাণিক কাহিনি আছে।
কারও কারও মতে তিনি পদ্ম বনে জন্মগ্রহণ করেছেন, কেউ কেউ বলেন তিনি কেয়াবনে জন্ম নিয়েছেন, তাই তার নাম হলো কেতুকা। শ্রাবণ মাস মূলত বর্ষাকাল। এই সময় খুব সাপের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। গ্রাম বাংলার বেশিরভাগ মানুষই কৃষিজীবী।
মাঠে ঘাটে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময়ই তাঁরা সাপের কামড়ের শিকার হন। মা মনসাকে সাপের দেবী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তাই সাপের ছোবল থেকে বাঁচতে সর্পের দেবী মনসা কে পুজো করার রীতি প্রচলিত হয়েছে বাংলার ঘরে ঘরে।