ফলে আমাদের যে এবার গৃহহীন হতে হবে, তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই৷ এখন মা গঙ্গাই ভরসা৷ সে শান্ত হলে এলাকা বাঁচবে৷ বাঁচবে অন্তত দেড় লাখ মানুষ৷ তাই এদিন আমরা পুজো করে, গান গেয়ে গঙ্গাকে শান্ত হওয়ার আর্জি জানিয়েছি’। চলতি মরশুমে গঙ্গার ভাঙনে বিপর্যস্ত মানিকচকে ভূতনি চরে থাকা তিনটি অঞ্চলের সঙ্গে রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতও৷ ইতিমধ্যে প্রচুর বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে৷ এই অবস্থায় নদীর ধারে থাকা বাড়িঘর ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছেন গ্রামবাসীরা৷
তাঁদের আশঙ্কা, ভাদ্রে নদীর জল বাড়লেই তাঁরা বানভাসি হবেন৷ তার সঙ্গে ভাঙনে তলিয়ে যাবে বাড়িঘর৷ তাই সময় থাকতেই সাবধান হচ্ছেন তাঁরা৷ এদিন গঙ্গাপুজো দিয়ে পশ্চিম রতনপুরের বাসিন্দা শিবানী চৌধুরী বলেন, ‘গঙ্গা আমাদের আর কিছু রাখেনি৷ সব গিলে নিয়েছে৷ এবার বাড়ি গিলতে আসছে৷ আমরা গরিব মানুষ৷ বাড়িঘর হারিয়ে যাব কোথায়? খাব কী? এখনও পর্যন্ত BDO বা DM এখানে আসেননি৷ সেচ দফতরেরও দেখা নেই৷ এদিকে বাঁধ ভেঙে হাঁ হয়ে রয়েছে৷ যে কোনও সময় জল ভিতরে ঢুকে আসবে৷ তখন বাঁধের কোনও অস্তিত্বই থাকবে না৷
এখন গঙ্গাই আমাদের ভরসা৷ সে তুষ্ট হলে আমরা বাঁচব৷ তাই আজ আমরা এলাকার ৫০ জন মহিলা পুজো দিলাম’। বিলাইমারি অঞ্চলের উপপ্রধান রামলাল চৌধুরী বলেছেন, ‘এবার প্রথম নয়৷ এই নিয়ে সাতবার ভূতনির বাঁধ ভাঙল৷ যখনই বাঁধ ভাঙে, সেচ দফতর আর প্রশাসনের লোকজন আসে, মোটা টাকার টেন্ডার হয়, ঠিকাদাররা লুটের রাজত্ব চালায়৷
ঠিকমতো কাজ হলে বছরের পর বছর ভাঙনে ভূতনির আয়তন ৫০ শতাংশ কমে যেত না৷ আসলে সরকার কিংবা সেচ দফতর, কেউ চাইছে না ভূতনি বাঁচুক৷ এবারও বাঁধ ভেঙেছে৷ জলস্তর নীচুতে থাকায় এখনও এলাকায় জল ঢোকেনি৷ তবে ভাদ্রে নদীর জল বাড়লে এলাকায় বন্যা হবেই৷ সঙ্গে চলবে আরও তীব্র ভাঙন৷ মানুষ যাবে কোথায়? এলাকায় এখন শুধুই আতঙ্ক’। রতুয়া BDO অফিসের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘এলাকায় ভাঙন রোধে জোরকদমে কাজ চলছে। প্রশাসন সতর্ক আছে। জল বাড়ার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।