রেল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত দশটার সময়ে বোলপুর স্টেশন থেকে রওনা দেয় আপ বর্ধমান-রামপুরহাট প্যাসেঞ্জার। ট্রেনটি প্রান্তিক স্টেশনের দিকে এগোতেই আচমকা বিকট শব্দ। লাইনের উপরে থাকা লোহার ভারি বস্তু ইঞ্জিনের ধাক্কায় ছিটকে যায়। এরপরেই প্রান্তিক স্টেশনে পৌঁছে আপ বর্ধমান-রামপুরহাট প্যাসেঞ্জারের চালক রিপোর্ট করেন স্টেশন মাস্টারকে।
রেললাইনের অনেক অংশ জুড়ে লোহার পাত ফেলে রাখার ফলে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা ছিল বলে জানান তিনি। এরপর রাত ১২. ২৬ নাগাদ ডাউন হাওড়াগামী গয়া এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের সঙ্গে একইভাবে ধাক্কা লাগে ভারী লোহার পাতের সঙ্গে। ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চালক ট্রেন দাঁড় করিয়ে দিতে বাধ্য হন। ট্রেন থেকে নেমে তিনি দেখেন, ইঞ্জিনের সামনে বিশাল লোহার পাত আটকে গিয়েছে।
ফলে ট্রেন এগোতে গেলে বাধা পাচ্ছে। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় ওই লোহার পাত ইঞ্জিন থেকে টেনে বের করার পরে রাত দেড়টা নাগাদ ট্রেনটি রওনা দেয়। যে কোনও সময়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে গয়া এক্সপ্রেসের চালকও স্টেশন মাস্টারকে জানান। দু’টি ঘটনার খবর যায় বোলপুর আরপিএফের কাছে। একই জায়গায় বারবার ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ায় সন্দেহ হয় আরপিএফের।
বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে রওনা দেন বোলপুরের আরপিএফ ইনস্পেক্টর গুলাম সরোবর। এলাকাটি ঘিরে ফেলার আগে অবশ্য দুষ্কৃতীরা গা-ঢাকা দেয়। রাত দুটো নাগাদ তৃতীয় বারের জন্য ফের রেললাইনে পাত ফেলার সময়ে আরপিএফ ঘটনাস্থল থেকে সাহেব থান্ডার নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আরপিএফ। ধৃতের বাড়ি বোলপুরের রামগঞ্জে।
ধৃতকে শুক্রবার বোলপুর আদালতে তোলা হলে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শনিবার বিকেলে প্রান্তিক এলাকা থেকে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ। ধৃত সাহেব অবশ্য জানিয়েছেন, লোহার ভারি পাত খণ্ড খণ্ড করার মতো যন্ত্র তাঁদের নেই। তাই ট্রেনের তলায় ফেলে কাটার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা।
ট্রেন যে এরফলে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে সেই ধারনা ছিল না তাঁদের। বোলপুরের আরপিএফ ইনস্পেক্টর গুলাম সরোবর বলেন, ‘ট্রেন দুর্ঘটনার চেষ্টার অভিযোগে তিন জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য দারায় মামলা করা হয়েছে।’