র্যাগিং’-এর জেরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার হল আরও এক প্রাক্তনী। ধৃতের নাম জয়দীপ ঘোষ। তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের কাঁদরায়। জয়দীপ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিভাগের ছাত্র ছিলেন। পাস করে যান ২০২১ সালে।
তবু জয়দীপ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর দাপট বজায় রেখে ছিলেন। ২০১৯ সালে তৎকালীন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্থার ঘটনায় জয়দীপের নাম জড়িয়ে ছিল। আর এবার তার বিরুদ্ধে উঠেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার দিন হস্টেলের গেট বন্ধ করে দিয়ে পুলিশকে তদন্তে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। যা জেনে স্তম্ভিত কেতুগ্রামের শিক্ষানুরাগী মহল।
অনেক স্বপ্ন নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়তে আসা প্রথম বর্ষের ছাত্রের ভয়াবহ মৃত্যুর ঘটনা রাজ্য জুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। গত ৯ অগাস্ট রাতে ঘটে ওই ভয়াবহ ঘটনা। এর ঠিক দু’দিন পর অর্থাৎ ১২ অগাস্ট কেতুগ্রামের কাঁদরার বাড়িতে চলে আসে জয়দীপ। ১৭ অগাস্ট ইমেলে নোটিশ পাঠিয়ে তাঁকে তলব করে যাদবপুর থানার পুলিশ।
মেল পেয়ে শনিবার যাদবপুর থানায় যায় জয়দীপ । দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার রাতের দিকে পুলিশ জয়দীপকে গ্রেফতার করে। জয়দীপের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি বিভাগের সদ্য প্রাক্তনী মেমারির নাসিম আক্তারকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
এখনও পর্যন্ত যাদবপুর কাণ্ডে মোট ১৩ জন গ্রেফতার হল। কেতুগ্রামের কাঁদরার বাসিন্দা বংশীলাল ঘোষ ও উত্তরা ঘোষের দুই ছেলের মধ্যে ছোট জয়দীপ। বড় ছেলে শুভদীপও যাদবপুরের প্রাক্তন ছাত্র। সে বর্তমানে তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করছে। ছোট জয়দীপ একাদশ দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিশ্বভারতীতে পড়াশুনা করে।
পরে সে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ২০২১ সালে পড়াশোনা শেষ করে। গ্রামে বংশীলাল ঘোষের একটি মিষ্টির দোকান আছে। পাশাপাশি তিনি চাষবাসও করেন। বংশীলালবাবু রবিবার জানান, আমার ছোট ছেলে যাদবপুর থানার বিক্রমগড়ে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিল। সেখানে থেকে চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। যাদবপুর কাণ্ডে আমার ছেলে কোনও ভাবেই জড়িত নয়। তাঁর ছেলে নির্দোষ বলে জানান তিনি।