জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইতিহাসের দরজায় কড়া নাড়ছিল ভারত এবং এক ভারতীয়। ২৩ অগস্ট বুধবার, দেশের প্রতিটি মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন, কখন চাঁদের মাটিতে অবতরণ চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3)। একেবারে কথা মতো এদিন সন্ধ্যায় চাঁদের পিঠে পা রেখেছিল ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। মহাকাশ বিপ্লবে ভারতের ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী থেকেছে দেশবাসী। এর পাশাপাশি দেশের মানুষের চোখ ছিল দাবা বিশ্বকাপের ফাইনালে (Chess World Cup 2023)। যেখানে মুখোমুখি হয়েছিলেন বিশ্বের এক নম্বর দাবাড়ু ম্যাগনাস কার্লসেন ও ভারতের বিস্ময় প্রতিভা রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ (Rameshbabu Praggnanandhaa vs Magnus Carlsen)। তবে দেশবাসীর প্রতীক্ষা আরও একটু বেড়েছিল। কারণ বিশ্বযুদ্ধে কার্লসেন বনাম প্রজ্ঞানন্দ দ্বৈরথের দ্বিতীয় রাউন্ডও ড্র হয়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজ খেলা গড়িয়েছিল টাইব্রেকার। টাই ব্রেক করে বিশ্বকাপ জিতলেন কার্লসেন, প্রজ্ঞার হারে স্বপ্নভঙ্গ হল ভারতের! এই প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতলেন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও চারবারের ব়্যাপিড চেস চ্যাম্পিয়ন। তবে এদিন বিশ্বকাপে রানার্স হয়ে সর্বকনিষ্ঠ দাবাড়ু হিসাবে ক্যান্ডিডেটসের ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করলেন প্রজ্ঞা।
আরও পড়ুন: Chess World Cup 2023: বিশ্বযুদ্ধের দ্বিতীয় রাউন্ডও ড্র, ফয়সলা হবে টাইব্রেকারে, কী বলছেন প্রজ্ঞানন্দ?
টাইব্রেকারের নিয়ম বলছে যে, প্রথমে ২৫ মিনিট করে দু’টি র্যাপিড প্রতিযোগিতা খেলবেন কার্লসেন-প্রজ্ঞানন্দ। সেখানে অমীমাংসিত থাকলে খেলা গড়াবে ১০ মিনিটের দু’টি র্যাপিড প্রতিযোগিতায়। এখানেও যদি ফয়সলা না হয়, তাহলে ১০ মিনিট করে জোড়া ব্লিৎজ রাউন্ড চলবে। এখান থেকেও যদি বিজয়ীকে না পাওয়া যায়, তাহলে আরও একবার ব্লিৎজ প্রতিযোগিতা। এখান থেকে চ্যাম্পিয়ন না পাওয়া পর্যন্ত খেলা চলবেই। এদিন টাইব্রেকারের প্রথম র্যাপিড রাউন্ড থেকেই ডিফেন্সিভ স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিলেন দুই দাবাড়ু। সেয়ানে-সেয়ানে লড়াই চলছিল একটা সময় পর্যন্ত। তেমনটাই প্রত্যাশা ছিল। তবে সময়ের খেলায় কার্লসেন বাজিমাত করেন প্রজ্ঞাকে। র্যাপিডের দ্বিতীয় রাউন্ডে সাদা ঘুঁটি নিয়ে খেলায় বাড়তি সুবিধা পান নরওয়ের সুপারস্টার। মহাযুদ্ধে আসলে স্নায়ুর যুদ্ধ। আর সেখানে চাপমুক্ত হয়েই প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করতে হয়। এই ব্যাপারটাই কোথাও কার্লসেন শিখিয়ে দিলেন প্রজ্ঞাকে। কার্লসেন ঠান্ডা মাথায় একের পর এক চাল দিচ্ছিলেন। সেখানে প্রতিটি চালের জন্য অনেকটা সময় নেন প্রজ্ঞা। বোঝাই যাচ্ছিল যে, তিনি বেশ চাপে আছেন। ২২ চালের পরে ড্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন দুই দাবাড়ু। ফলে খেতাব জিতে নেন কার্লসেন। তবে প্রজ্ঞা যে এই বয়সে এতদূর পর্যন্ত আসতে পেরেছেন, তার জন্যই সকলে গর্বিত বোধ করছেন। প্রজ্ঞার পুরো জীবন পড়ে রয়েছে চৌষট্টি খোপে রাজত্ব করার জন্য়। তিনি তা করবেনই। এখনই বলে দেওয়া যায়।