জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় চুঁচুড়ার চকবাজারে জগন্নাথ খাঁড়ার হোটেলে চড়াও হন স্বপন দত্ত। অভিযোগ, পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। ব্যবসায়ী টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে কলার ধরে মারধর করেন বলেও অভিযোগ। এমনকী হোটেল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। হোটেলের সিসি ক্যামেরায় সেই ছবি ধরা পরেছে বলে জানা গিয়েছে। হোটেলের সামনে থাকা উনুনের জন্য নর্দমা পরিষ্কারে অসুবিধা হয় বলে, কিছুদিন আগে উনুনটি সরিয়ে ফেলতে বলা হয় পুরসভার তরফে। কিন্তু ব্যবসায়ী উনুন না সরানোয় কাউন্সিলরের স্বামী চাপ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ।
ঠিক কী ঘটেছে?
জগন্নাথ খাঁড়ার অভিযোগ, ‘৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের স্বামী আমার কাছে এসে বলেন, নির্দেশ আছে হোটেল ভেঙে সরিয়ে দেওয়ার। আমি বলি আমার কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি। পুরসভায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এরপরই সন্ধ্যাবেলায় স্বপন দত্ত এসে আমার হোটেলে চড়াও হন। পঞ্চাশ হাজার টাকা চান, আমাকে মারধর করে হোটেল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। আমি গোটা বিষয়টি ব্যবসায়ী সমিতিকে জানিয়েছি।’
অভিযোগ অস্বীকার কাউন্সিলরের স্বামীর
পালটা স্বপন দত্ত বলেন, ‘মহকুমা শাসকের নির্দেশ আছে, জবর দখল ভেঙে সরিয়ে দেওয়ার। সেটাই ওঁকে বলতে গিয়েছিলাম। আমি পঞ্চাশ হাজার টাকা চেয়েছি, এটা মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। রাস্তার পাশে নর্দমা দখল করে রেখেছে। পুরসভার রাস্তার উপরে দোকানের ছাউনি বেরিয়ে আছে। মহকুমা শাসকের নির্দেশ আছে, জবর দখল সরিয়ে দেওয়ার। সেটাই বলতে গিয়েছিলাম। হোটেল ব্যবসায়ীর এই বেআইনি জবর দখলে আমার দলেরই লোক ওকে সাহায্য করছে।’
হুঁশিয়ারি দিলেন কাউন্সিলর
তৃণমূল কাউন্সিলর রিতা দত্ত বলেন, ‘চকবাজার এলাকায় কিছু দোকানের সামনে জবর দখল হয়ে থাকায় নিকাশি সমস্যা হচ্ছিল। একটু বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে যাচ্ছিল রাস্তা। হোটেল ব্যবসায়ীকে বলা হলেও তিনি শোনেননি। উলটে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার অভিযোগ করেন। অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে শুধু উনুন ভাঙবো না ওর হোটেলই ভেঙে সরিয়ে দেব।’
এই বিষয়ে বিজেপি হুগলী সংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘তৃণমূলের এটাই ধর্ম। একবার ভোটে জিতে গেলে মানুষের ওপর, ব্যবসায়ীদের ওপর অত্যাচার করে। চকবাজারে ঘটনা তারই উদাহরণ।’
ঘটনায়, চকবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মদনমোহন পাল বলেন, ‘চকবাজারে ব্যবসা করে কত টাকা আয় হয় যে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে হবে। ৫০-১০০ হলে ঠিক আছে। আর জন প্রতিনিধি হয়েছে বলে কি মাথা কিনে নিয়েছে নাকি? বলছে হোটেল বন্ধ করে দেবে! ৭০ বছরের ব্যবসা কি করে বন্ধ করবে? এর আগে অনেক জনপ্রতিনিধি এসেছে গেছে, পুরসভার চেয়ারম্যান বদল হয়েছে, কোনদিনও এমন হয়নি। ব্যবসায় সমিতির সদস্যের ওপর আক্রমণ আমরা মানবো না। আইনত দিক থেকে যা করার করব।’