দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বসবাস মণ্ডল পরিবারের। খুদের বাবা ধ্রুব মণ্ডল পেশায় সেনাকর্মী ও মা সঙ্গীতা মণ্ডল গৃহবধূ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি রোগে আক্রান্ত সপ্তর্ষি। জন্মের পর থেকে আর পাঁচটা শিশুর মতো স্বাভাবিক নয় সপ্তর্ষি। ন’মাস বয়সেও সে একা একা হামাগড়ি দিতে পারে না। পারে না বসতেও। সপ্তর্ষির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন মহামূল্য ইঞ্জেকশন। সেই টাকা জোগাড় করতে সাধারণ মানুষের কাছে হাত পাতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার। একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মণ্ডল দম্পতি। সপ্তর্ষির চিকিৎসার অর্থ জোগাড়ে ফেসবুকেও চলছে প্রচার।
মণ্ডল পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মের পর সপ্তর্ষির শারীরিক সমস্যা সম্পর্কে অবগত ছিল না তার পরিবার। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা দেখে তাঁকে বালুরঘাটের শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে জিনগত সমীক্ষা করানোর পরই মাথায় হাত পরে পরিবারের। জানা যায় সপ্তর্ষি বিরল স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি রোগে আক্রান্ত। নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁকে কলকাতার হাসপাতাল ও দিল্লি এইমসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসরকরাও শিশুটিকে পরীক্ষা করে একই কথা বলে। চিকিৎসকরা মণ্ডল দম্পতিকে জানিয়ে দেয়, দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যেই চিকিৎসা না করানো হলে সপ্তর্ষিকে বাঁচানো যাবে না।
স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ। আমাদের দেশে এই রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধও অমিল। রোগের চিকিৎসার জন্য থাকা একটি মাত্র ইঞ্জেকশন এদেশে পাওয়া যায় না। বাইরের দেশ থেকে আনাতে হয়। এবং সেই ইঞ্জেকশনের দাম সাড়ে সতরো কোটি টাকা।
শিশুর মা সঙ্গীতা মণ্ডল এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘জন্মের পর থেকে আমার ছেলের শরীরে কোনও অস্বাভাবিক লক্ষ্মণ ছিল না। কিন্তু ওর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারি কিছু একটা সমস্যা রয়েছে। অন্যান্য শিশুদের মতো আমার ছেলে বসতে বা হামাগড়ি দিতে পারত না। তখন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর এই রোগ ধরা পড়েন। সবাই যদি সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন, তাহলে আমার ছেলেকে বাঁচানো হয়তো সম্ভব হবে।’