দেশের কোথাও বিপর্যয় হলেই ডাক পড়ে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের। হরপা বানই হোক বা পাহাড় ধসে রাস্তায় আটকে পড়া পর্যটক উদ্ধার, কিংবা ডুবন্ত মানুষকে উদ্ধার করা। এসবের জন্যেই চাই প্রকৃত প্রশিক্ষণ। আর সেই ট্রেনিং করতে করতেই উত্তরপাড়ার অনিলের সামনে খুলে যায় ভারতের হয়ে কমনওয়েলথ গেমসে অংশগ্রহণ করার সুযোগ।
গত জুন মাসে বেঙ্গালুরু, জুলাই মাসে পুণেতে অনুষ্ঠিত লাইভ সেভিং চ্যাম্পিয়নশিপে জিতে কানাডা যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছেন অনিল। সারা ভারত থেকে মাত্র ১২ জন। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মাত্র দু’জন। অনিল ছাড়া কলকাতার আরও একজন রয়েছেন। আগামী ১৩ই সেপ্টেম্বর কানাডাতে হবে সেই প্রতিযোগিতা ‘লাইফ সেভিং সুইমিং’।
তবে খুবই দরিদ্র পরিবার অনিলের। বিদেশে যাওয়া তাঁর কাছে স্বপ্ন। অনিলের কোচ কৌস্তুভ বাগচি বলেন, ‘অনিল মানুষের জীবন বাঁচায়। এটা একটা মহান কাজ। ও যখন সাঁতারে এল আমি ওকে মোটিভেট করি, ওর যেটা প্যাশন সেই ইভেন্টে নামতে।’ বেঙ্গল থেকে প্রতিনিধিত্ব করে ব্যাঙ্গালোরে জাতীয় প্রতিযোগিতা ২৬৫ জনের মধ্যে সিলেক্ট হয়। ২৫ জনকে নিয়ে জাতীয় শিবির হয়। সেখান থেকে প্রথম ১২ জনে সুযোগ পেয়েছে। তিনি জানান, এটা একটা বড় ব্যাপার। অবশ্যই ওর আর্থিক সমস্যা আছে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি অনিলের পাশে থাকার।
দাদা সুনীল সাউ সামান্য মাইনের চাকরি করে ভাইকে কমনওয়েলথ গেমসে পাঠাতে মরিয়া চেষ্টা করছেন। সুনীল বলেন, ‘ভাই সুযোগ তো পেয়েছে কানাডা যাওয়ার কিন্তু এখনও অনিশ্চয়তা কাটেনি। তাই রোজ সকাল সন্ধ্যায় ছুটে বেড়াচ্ছেন স্পন্সর যোগারের জন্য। ভাইকে কানাডা পাঠাতে প্রায় দু লাখ আঠান্ন হাজার টাকা খরচ, কোথা থেকে আসবে এত টাকা? কে দেবে? উত্তর জানা নেই তাদের।তবে যে সুযোগ এসেছে তাকে কাজে লাগাতে চায় অনিল।এই প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ পদক জিততে চলছে কঠোর অনুশীলন।
অনিল বলেন, ‘২০২১-২২ থেকে লাইফ সেভিং সুইমিং করি। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছি। ২০২৩ সালে ব্যাঙ্গালোরে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় চারটি সোনা জিতে চ্যাম্পিয়ান হয়েছি। এবার যে সুযোগ পেয়েছি সেটা কাজে লাগাতে চাই।’ দেশের জন্য একটা সোনার পদক আনতে চাওয়ার কথা জানান তিনি।