শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার খবরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ক্য়াম্পাসে ঢুকতেই পারছেন না অস্থায়ী উপাচার্য। কেন? তাঁর আশঙ্কা, ক্যাম্পাসে ঢুকলে নিগৃহীত হতে পারেন। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। কর্মচারীদের একাংশের বিক্ষোভের জেরে কাজ করতে পারছেন না তিনি। এমনটাই অভিযোগ উপাচার্যের।
আরও পড়ুন-নাচ বন্ধের চাপ শ্বশুরবাড়ির, বিচ্ছেদের মামলা চলার মাঝেই স্ত্রীকে নৃশংস খুন স্বামীর!
প্রাক্তন বিচারপতি ও বর্তমানে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালের উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গত সোমবার থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছেন না। একদল কর্মচারী যখনতখন ঘরে ঢুকে পড়ছে। কটূক্তি করছে। অশ্রাব্য কথাবার্তা বলছে। এভাবে যে কাজ করা যায় না রাজ্যপালকে তা জানানো হয়েছে। রেজিস্ট্রারকে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাশাসনিক ব্লকটি গেট দিয়ে ঘিরে দিতে হবে। সিসিটিভি বসাতে হবে। উপাচার্যের ঘর নীচের তলা থেকে উপরের তলায় নিয়ে যেতে হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব।
গত সোমবার থেকে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন না শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। এনিয়ে জি ২৪ ঘণ্টাকে তিনি বলেন, গত ৭ জুলাই উপাচার্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিই। আগেই বলে দিয়েছিলাম কোনও সাম্মানিক নেব না। এটা সামাজিক কাজ হিসেবে করতে চাই। কাজে যোগ দেওয়ার পর কর্মচারী ইউনিয়নের যারা রয়েছেন তারা উপাচার্যের ঘরে ঢুকে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করছেন। তাদের দাবি, আপনি নির্বাচিত সরকারের পছন্দের লোক নন। আপনার কোনও যোগ্যতা নেই। আপনি পদত্যাগ করে চলে যান। ভিসির গাড়ি চালানোর যোগ্যতাও আপনার নেই। ওদের সভাপতি সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায়কে বলেছি, এত উত্তেজিত হলে তো আপনারও তো শরীর খারাপ হবে।
কেন আপানাকে টার্গেট করা হচ্ছে? উপাচার্যের বক্তব্য, কাজের জন্য নয়। ঘরের মধ্যে ঢুকে যেভাবে ওরা হইচই করছে তাতে কোনও ভদ্রলোকের পক্ষে ওখানে কাজ করা সম্ভব নয়। আমি রেজিস্ট্রারকে বলেছি প্রশাসনিক ব্লকটিকে ঘিরে ফেলুন। সিসিটিভি বসান ও রক্ষী নিয়োগ করুন। একজন রয়েছেন যার নাম সুশান্ত চক্রবর্তী। ডাকনাম বাপি। উনি ওখানে কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা ছিলেন, এখন অবসর নিয়েছেন। উনি রোজ আসেন আরও ওদের তাতান। রেজিস্ট্রারকে যা করতে বলেছি তা করা হলে আমি ওখানে যাব। এখন যেসব ফাইল আসছে তা বাড়িতে এলে সই করে দিচ্ছি। ঘরের মধ্যে ঢুকে কেউ যদি অসভ্যতা করে তাহলে কি আর কাজ করার মানসিকতা থাকে? এরা কী চাইছে বুঝতে পারছি না। ইউনিভার্সিটিটিকে উচ্ছন্নে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত এরা কি থামবে না? এরা বারবার বলছে বিজেপি বা আরএসএসের হস্তক্ষেপ আমরা স্বীকার করব না। আমিও বলছি কোনও রাজনৈতিক দলের হস্তক্ষেপ এখানে দরকার নেই। মানস ভুঁইয়া যিনি বিধায়ক তিনি ওদের প্রেসিডেন্ট। তাই ধরে নিতে হবে ওরা তৃণমূলের লোক। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এনিয়ে কোনও কথা হয়নি। তাঁর সঙ্গে আমার কোনও বিরোধ নেই।
কর্মচারী সংগঠনের নেতা সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আমাদের কিছুকিছু দাবি ছিল। সেই সব দাবি নিয়েই উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম। তাতে উনি যদি আশঙ্কা করেন ওঁকে নিগ্রহ করার চেষ্টা হচ্ছে তাহলে এটা মিথ্যে। আমরা দিন দুয়েক গিয়েছিলাম। আমাদের দাবি মিটে গিয়েছে। তারপর আমরা আর যাইনি। উনি আমাদের বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ করছেন। প্রথম থেকেই ইনি ছাত্র ও শিক্ষাকর্মীদের কোনও ব্যাপারে ডাকেন না। কয়েকজন অধ্যাপকদের নিয়ে উনি বসে থাকেন। উনি যে ভবনটিতে বসেন সেটি হেরিটেজ ভবন। সেটিকে ঘিরে দিতে বলছেন। বলছেন সেখানে এক্স আর্মিকে রাখতে, বন্দুক রাখতে। বিশ্ববিদ্যালয়কে কি জম্মু-কাশ্মীর ভাবছেন?আমাদের সংগঠন তৃণমূলের। তাই কেন্দ্র সরকারের নির্দেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে কালি ছেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।