Duttapukur Blast : ১০০০ ‘মাল’ করতে পারলেই ১২০ টাকা! দত্তপুকুরে কীভাবে চলত গোটা কারবার? – duttapukur blast many family members involve in making of alu bomb


১০০০ মাল করতে পারলেই ১২০ টাকা পাওয়া যেত। গ্রামের ২০০ বাড়ি থাকলে ১৫০ বাড়ির মহিলারাই এই কাজে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু গোটা গ্রাম ঘুরলেও এখন এই নিয়ে কেউ সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে নারাজ। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি এই বাজির ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে গ্রামের ৮০ শতাংশ বাড়ির মহিলাদেরই সমস্যায় পড়তে হবে। কেন সমস্যায় পড়বেন গ্রামের মহিলারা? কেনই বা হবে আর্থিক ক্ষতি? অবশেষে জানা গেল কারণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা গোটা ঘটনার কথা জানালেন।

উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত মোচপোল পশ্চিমপাড়া গত রবিবারই এক বাজি কারখানায় ঘটেছে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। বাজি ছাড়াও সেখানে অন্য কোনও বিস্ফোরক ছিল কি না, তা এখন তদন্ত সাপেক্ষ। গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা তৃণমূলের সমর্থক হলেও পরবর্তীতে তাঁরাই ISF হয়ে যান। এবছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে পশ্চিমপাড়ায় জয়লাভ করে নওশাদ সিদ্দিকির দল। পাশের পূর্বপাড়ার জয়ী হয় তৃণমূল।

Duttapukur Blast News : দত্তপুকুর ফেরাল পিংলার স্মৃতি! সেই অভিশপ্ত সুতি থেকেই বাজি বিস্ফোরণের বলি ৬ কারিগর
গ্রামের উত্থান খুব দ্রুত হচ্ছিল, লাফিয়ে বাড়ছিল বাজির ব্যবসা। ফায়দা গ্রাম ছাড়িয়ে অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়ছিল। কাজের অভাব ছিল না গ্রামের মহিলাদের। আলু বোম বানানো নিয়ে মহিলাদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলত, যে কে কত বেশি করে বানাতে পারবেন। স্থানীয়দের কথ্য ভাষায় আলু বোমই হয়ে যায় ‘মাল’।

Duttapukur Blast : ফের সেই দত্তপুকুর! বিস্ফোরণস্থলের অদূরেই বিপুল শব্দবাজি উদ্ধার
১ হাজার আলুবোম বানাতে পারলে মিলবে ১২০ টাকা। এই এক হাজার মাল বানাতে ঘন্টা দুয়েক সময় লাগে।সারাদিনে ৪-৫ হাজার মাল বানানো কোনও ব্যাপার নয়। একজন মহিলা প্রত্যেকদিন গড়ে ৫০০ টাকা রোজগার করতেন। এই ব্যবসায় ২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে পারলে ফেরত পাওয়া যেত ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ধনীরা বাজি কারখানা টাকা বিনিয়োগ করে এভাবে অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে ফেলতেন। ভ্যানে করে বাড়ি বাড়ি স্টোনচিপ ও বারুদ চলে আসত। সঙ্গে দিয়ে যাওয়া হত রংবেরঙের প্লাস্টিক।

Duttapukur Blast : ছ’মাস আগেই নালিশ থানায়, এলাকাবাসীর প্রশ্নে ‘মাসোহারা’
মজুরির টাকা একবারে তোলার জন্য অনেকেই বাজি কারখানায় টাকা রাখতেন। বিস্ফোরণের পর তাঁরা এখন ক্ষোভে ফুঁসছেন। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। অনেকেরই ২০-২৫ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা আদৌ পাওয়া যাবে না কিনা, তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারছেন না। যে কারখানায় এই বিস্ফোরণ হয়েছিলো সেই কারখানার রোজগারেই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ আজ বড়লোক। তবে কারখানায় বসে যারা কাজ করতো তারা অধিকাংশই বাইরে থেকে এসে থেকে কাজ করতেন। তাঁরাই এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। সেই গ্রামেই এখন অন্য ছবি। কান পাতলেই পুলিশের বুটের আওয়াজ। গ্রাম একেবারে ঠান্ডা। কিন্তু এত আলু বোম কোথায় লাগত? সেই প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *