Duttapukur Blast : দত্তপুকুরে আলু বোমা বাঁধার ইকোনমিতেই স্বনির্ভর মহিলারা, মুখে কুলুপ প্রশাসনের – in mochpol of duttapkur it is said that women used to work on tying bombs


অশীন বিশ্বাস দত্তপুকুর
আলু বোম! কালীপটকা বা চকলেট বোমের মতো আগুন দেওয়ার ঝক্কি নেই। দেওয়াল বা মাটিতে ছুঁড়ে মারলেই দুম করে ফাটবে। এই আলু বোম এখন বহুল চর্চিত। সৌজন্যে দত্তপুকুরের মোচপোলের ভয়াবহ বিস্ফোরণ। আলু বোম থেকেই বিস্ফোরণ কি না তা সময় বলবে, তবে এই আলু বোম যে এই গ্রামের অর্থনীতি বদলে দিয়েছিল, তা এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। মোচপোলের পশ্চিমপাড়ার ঘরে ঘরে তৈরি হতো আলু বোম। বানাতেন গ্রামের মহিলারা। জোগানের দায়িত্বে ছিলেন কেরামত আলি এবং সামসুল আলি। যে দু’জনই বিস্ফোরণে মারা গিয়েছেন।

Duttapukur Blast : ১০০০ ‘মাল’ করতে পারলেই ১২০ টাকা! দত্তপুকুরে কীভাবে চলত গোটা কারবার?
মোচপোলের পশ্চিমপাড়া গ্রামের প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়িতেই মহিলারা এই কাজে যুক্ত ছিলেন। এক হাজার আলু বোম বাঁধলে ১২০ টাকা। যে যত বেশি বাঁধবেন, তার তত রোজগার। বিস্ফোরণে ভস্মীভূত সামসুলের বাড়ির পিছনে বাঁশবাগানে বারুদ ও পাথরকুচির সংমিশ্রণ দিয়ে কাগজের পুরিয়া বানানো হতো। প্রতিদিন সকালে ভ্যানে করে তা পৌঁছে যেত বাড়ি বাড়ি। সঙ্গে দেওয়া হত নির্দিষ্ট মাপের জরি প্লাস্টিক। বাড়ির মহিলারা কাগজের ওই পুরিয়ার উপর জরি প্লাস্টিক জড়িয়ে শক্ত করে বেঁধে তা পৌঁছে দিতেন সামসুলের বাড়িতে। এরপর সেগুলি প্যাকেটে ভরে বাজারে ছাড়া হতো।

Duttapukur Blast : ছ’মাস আগেই নালিশ থানায়, এলাকাবাসীর প্রশ্নে ‘মাসোহারা’
স্থানীয়রা জানালেন, একটু এক্সপার্ট হলেই দেড়-দু’ঘন্টায় এক হাজার আলু বোম বাঁধাই করা সম্ভব। ফলে বাড়ির কাজ করে কোনও মহিলা যদি দিনে চার-পাঁচ ঘন্টা আলু বোম বাঁধেন, তবে দিনে তিনশো টাকা রোজগার। কখনও তারচেয়েও বেশি। পশ্চিমপাড়ায় প্রায় দুশোর মতো পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে শ’দেড়েক পরিবারের মহিলা কেরামত-সামসুলের হয়ে কাজ করতেন। স্থানীয়দের কথায়, কাউকে বেশি, কাউকে কম বোম বাঁধাই করতে দেওয়া নিয়ে মহিলাদের মধ্যে ঝগড়াও হয়েছে।

Duttapukur Blast : দত্তপুকুরে বিস্ফোরণে মৃত্যু শিশুশ্রমিকেরও, বরখাস্ত ২ পুলিশ আধিকারিক
উল্লেখ্য, এখন প্রায় সারা বছরই আলু বোমের বিক্রি রয়েছে। এ রাজ্য তো বটেই ভিন রাজ্যে বিশেষ করে বিহার, উত্তরপ্রদেশে এখন বিয়ের অনুষ্ঠানে এই আলু বোমার বিশেষ চল। তাই পশ্চিমপাড়ার মহিলাদেরও কাজের অভাব হতো না। অনেকেই মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা বোমা বেঁধে রোজগার করতেন। এখন অবশ্য অনেক মহিলাই বেশ চিন্তায়। তাঁদের যে বকেয়া রয়ে গিয়েছে অনেক টাকা। যে টাকা পাওয়ার কথা ছিল পুজোর পর। যদিও প্রকাশ্যে কেউ তা নিয়ে মুখ খুলছেন না।

Duttapukur News : ফ্রিজেই পড়ে মাংসের বাটি, প্রেমিকার সঙ্গে ঘর বাঁধা হল না রবিউলের
প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যেখানে একটা প্রায় গোটা গ্রাম বাজি তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে, সেখানে পুলিশ কিছুই জানত না? নাকি, ঘটনার সঙ্গে কোনও প্রভাবশালীর যোগ রয়েছে বলেই পুলিশের মুখে কুলুপ। স্থানীয় বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, ‘প্রশাসনিক ব্যর্থতা তো নিশ্চয় ছিল। পুলিশ যদি বিষয়টি না জানে সেটা অন্যায়। তবে মোচপোল গ্রামে বাজি কারখানা রয়েছে বলে আমার কিছুই জানা ছিল না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *