‘মৃত্যুদণ্ডও কম, পাবলিকের হাতে ছেড়ে দিলে শায়েস্তা হত’, বললেন সুতপার মা


এত প্রাণবন্ত মেয়ে ছিল আমার। ওঁকে কি আর ফেরত পাব? বলতে বলতেই ঝরঝরিয়ে কেঁদে উঠলেন সুতপার মা। টিভিতে তখন সুতপার হত্যাকারী সুশান্তর মৃত্যুদণ্ডের ঘোষণার খবর পরিবেশিত হচ্ছে। চোখের জল বাঁধ মানল না মায়ের। আক্ষেপ একটাই, মেয়ে তো আর ফেরত আসবে না।

Sutapa Chowdhury : বহরমপুরে মেসের সামনে কুপিয়ে প্রেমিকাকে খুন, ফাঁসির সাজা সুশান্তর
রায়দান নিয়ে কী জানালেন সুতপার মা?

তবে শত কষ্টের মধ্যেও সুতপার মা জানান, ওই ছেলেকে ফাঁসি দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমার মেয়ে যেভাবে কষ্ট পেয়ে মরেছে, সেই কষ্ট তো ও আর পেল না। ওকে পাবলিকের হাতে তুলে দেওয়া উচিত ছিল। তাহলে ও সঠিক শাস্তি পেত। বলতে বলতেই ফের ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন তিনি। ফাঁসির সাজা ঘোষণা মায়ের মনে ক্ষতে কিছুটা হলেও হয়তো প্রলেপ লাগাতে পেরেছে, কিন্তু মেয়ের মুখটা ভেসে ওঠে প্রতি মুহূর্তেই। সেই বেদনা বুকে চেপে রেখে কাটাতে হবে বাকি জীবনটা।

Sutapa Murder Case : ৬ মাসে ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহন, সুতপা হত্যাকাণ্ডে আজ রায় দান
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কী মত?

তবে, পুলিশের তদন্তের ভূমিকায় সন্তুষ্ট তিনি। অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েদের উপর এরকম অত্যাচার বা হত্যাকাণ্ড হয়, কিন্তু তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এত দ্রুত বিচার অনেক সময় পান না। ঘটনার এক বছর ঘুরতেই মেয়ের মৃত্যুর বিচার পেলেন তিনি। তিনি জানান, পুলিশের কাজের উপর আমার ভরসা ছিল। ওদের কাজে আমি সন্তুষ্ট। আদালতের কাজের উপরেও আমি যথেষ্ট সন্তুষ্ট।

Sutapa Chowdhury Murder Case : ‘ওই শয়তানের ফাঁসি চাই…’, সুশান্ত দোষী সাব্যস্ত হতেই কেঁদে ভাসালেন সুতপার বাবা
পরিবারের লোকজন কী বলছেন?

বহরমপুরের কলেজছাত্রী খুনের ঘটনায় ফাঁসির সাজা দেওয়া হল অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে। কার্যত এই রায়দানের পর মৃত সুতপা চৌধুরী পরিবারের লোকেরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেলেন। তাঁরা বলছেন, এবারে তাদের মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে। তবে মেয়ের এই মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সকলেই। আজও বাড়ির আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রাণবন্ত কলেজ ছাত্রী সুতপার স্মৃতি চিহ্ন।

ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল?

উল্লেখ্য, গত ২০২২ সালের ২ মে বহরমপুরের জনবহুল গোরাবাজারে সন্ধ্যাবেলায় সকলের সামনে খুন করা হয় সুতপাকে। তাঁর স্বঘোষিত প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীর হাতে খুন হতে হয় কলেজছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে। সুশান্তর সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টেনেছিলেন সুতপা। এর পরেও তাঁকে বিরক্ত করা হতো বলে দাবি করা হয়।

এরপর মালদার বাসিন্দা সুতপাকে অভিযুক্ত সুশান্তর হাত থেকে বাঁচাতে বহরমপুর কলেজে ভর্তি করেছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কলেজের কাচ মেসে থেকে পড়াশুনো করতেন তিনি। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে মেসে ফেরার সময় মেসের গেটের সামনে তাঁর ওপর হামলা চালায় সুশান্ত। এই ঘটনার ১৫ মাসের মধ্যে আজকে রায়দান করল আদালত।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *