‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতির বাস্তবতা কোথায়? কলম ধরলেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ অমল মুখোপাধ্যায়


‘এক দেশ, এক ভোট’ পদ্ধতি চালুর পথে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই আইন কমিশনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফায় আলোচনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। নীতি কার্যকর করতে তৈরি করা হয়েছে কমিটি। সেই কমিটির মাথায় থাকতে চলেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ। ‘এক দেশ, এক ভোট’ পদ্ধতি দেশের জন্য কতটা কার্যকরী? সাধারণ মানুষের লাভ-ক্ষতির খাতায় যুক্ত হচ্ছে কতগুলি পয়েন্ট? পুরো বিষয়টি নিয়ে কলম ধরলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ অমল মুখোপাধ্যায়।

One Nation One Election : ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ নিয়ে বড় পদক্ষেপ! কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি গঠন মোদী সরকারের
‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতির ইতিহাস

আমাদের মনে রাখতে হবে, অতীতে আমাদের দেশে এই পদ্ধতি চালু ছিল। চতুর্থ সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত আমাদের দেশে কেন্দ্রীয় সংসদের নির্বাচন এবং বিধানসভার নির্বাচন একসঙ্গে হতো। ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত এই নিয়ম চালু ছিল। এরপর ধীরে ধীরে একাধিক কারণে কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচন এবং বিধানসভা নির্বাচন আলাদা হতে শুরু করে।

Parliament Special Session : ডিসেম্বরেই একসঙ্গে বিধানসভা-লোকসভা ভোট? ৫ দিনের সংসদ অধিবেশনে বড় ধমাকা?
কেন্দ্রীয় সরকার কী চাইছে?

দেশের নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে, সংসদের নির্বাচন এবং রাজ্যের বিধানসভাগুলির নির্বাচন একসঙ্গে হোক। আমি BJP দলের সমর্থক নই, কিন্তু দেশের স্বার্থে আমি এই প্রস্তাবকে সমর্থন করি।

Election Commission: এবার ‘এক ব্যক্তি এক আসন’, নির্বাচনে বড় বদল আনছে কমিশন?
এই পদ্ধতি চালু হওয়ার কারণ?

আমাদের দেশের নির্বাচনগুলিতে কয়েক হাজার কোটি টাকা অর্থ ব্যয় হয়। কিন্তু, একসঙ্গে নির্বাচন হলে সেই অর্থ সাশ্রয় হবে। এত টাকা খরচ হওয়া অবাঞ্ছনীয়। ভারতবর্ষের মতো দরিদ্র দেশে নির্বাচনের কারণে টাকা এত খরচ হওয়া একেবারেই অনুচিত। এই নতুন পদ্ধতিতে যে টাকা সঞ্চয় হবে, সেই টাকা দেশের মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে কাজে লাগানো যাবে।

No Confidence Motion Live: লোকসভার বাদল অধিবেশন, দেখুন সরাসরি

বিরোধী দলগুলোর ভূমিকা কী?

আমাদের দেশে অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাঁরা অনেকে এই বিষয়টিতে বাধা প্রদান করতে পারেন। সামনের বছর কেন্দ্রীয় সংসদের নির্বাচন রয়েছে, অনেক বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সেগুলির নির্বাচন একসঙ্গে হতে পারে। আমাদের বিরোধী দলগুলি বা যাঁরা INDIA জোট করেছেন, তাঁরা নিঃসন্দেহে বাধা দেবেন। তাঁরা মনে করতে পারেন, এতে কেন্দ্রের শাসক দলের অনেক রাজনৈতিক সুবিধা হয়ে যাবে।

সাধারণ নাগরিকদের লাভ কোথায়?

সাধারণ নাগরিকরা আমার ধারণা এই প্রস্তাবকে সমর্থন করবেন, তার কারণ হচ্ছে যে টাকাটা সাশ্রয় হবে, সেটা সরকার তাঁদের স্বার্থেই খরচ করবেন। সে কারণে, আমি নিশ্চিত যাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন, বা যাঁরা সাধারণ নাগরিক তাঁরা অবশ্যই এই প্রস্তাবকে সমর্থন করবেন।
উল্লেখ্য, এই নীতি এখনও পর্যন্ত চালু হয়নি। তবে বর্তমানে নির্বাচন সংগঠিত হওয়ার জন্য একটি সাইকেল অনুসরণ করা হয় প্রতি বছর। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। সেখানে ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ সংক্রান্ত বিল পেশ করা হতে পারে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *