পাশাপাশি পাড়ায় বাড়ি। ২০২২ সালে প্রেম করেই বিয়ে হয় অনুশ্রী ও চন্দনের। তাদের বিয়েতে সম্মতি ছিল পরিবারেরও। কিন্তু বিয়ের ১৪ মাসের মাথায় সেই বিয়েরই সব সম্পর্ক ছিন্ন করে এক কাপড়ে বাপের বাড়ি ফিরে এসেছিলেন অনুশ্রী। তাঁর বাড়ির তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, মেয়েকে নির্যাতন করতেন জামাই। এমনকী ছোট থেকেই নাচ প্রিয় অনুশ্রীকে তাঁর পারফর্মমেন্স নিয়েও কথা শোনানো হত। ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রনৃত্য, নজরুলগীতির সঙ্গে নৃত্য এবং ভরতনাট্যমে দক্ষ ছিলেন। তালিমপ্রাপ্ত অনুশ্রীকে নাচতে বাধা দিয়ে নির্যাতন করা হত বলে অভিযোগ করা হয় তাঁর বাড়ির তরফে।
গত রবিবার নিজের স্ত্রী অনুশ্রী হাজরাকে গুলি করে খুন করে স্বামী চন্দন মাঝি। তাঁকে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। পুলিশকে সে জানায়, একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অনুশ্রীর। সেটা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছিল না সে। বারবার বুঝিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তাই খুন করার পরিকল্পনা করে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় অনুশ্রী হাজরার স্বামী অভিযুক্ত চন্দন স্বীকার করে নিয়েছেন দাম্পত্য কলহের কথা। কিন্তু তিনি জানান, নাচ নয়, তাদের মধ্যে সম্পর্ক অবনতির আসল কারণ ছিল অনুশ্রীর একাধিক সম্পর্ক। বিয়ের পরও একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ চন্দনের। এমনকী একাধিক পুরুষের সঙ্গে বিয়ের পরও শারীরিক সম্পর্ক ছিল অনুশ্রীর। জানতে পেরেই মানসিকভাবে ধাক্কা খান চন্দন বলে দাবি। এরপরেও অনুশ্রীকে বারণ করা সত্ত্বেও সে কথা শোনেনি বলে দাবি। মাস চারেক আগে ১৯ এপ্রিল শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি চলে যান তিনি। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও করেন। সেই মামলা চলাকালীনও নিজের বহু প্রেম বজায় রেখেছিলেন। সেই রাগেই শোধ নিতে ছক কষে বলে স্বীকারোক্তিতে চন্দন জানিয়েছে।
ছক কষেই রবিবার রাতে সে দেখা করতে বলে অনুশ্রীকে। কিন্তু দেখা না করায় রাতে ফেরার পথে লুকিয়ে ছিল চন্দন। সামনে আসতে তখন কাছ থেকে অনুশ্রীকে গুলি করে সে। গুলি করার পর কাটলিয়ার পাসপুকুরে সে পিস্তলটি ফেলে দিয়েছিল বলে পুলিশকে জানায়।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ডোমজুড় কাটলিয়া এলাকায় একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় অনুশ্রীকে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র, সেভেন এম এম পিস্তল। কলকাতা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ডুবুরি নামিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করে ডোমজুড় থানার পুলিশ।