গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায় এসে মিশেছে বিহার রোড। অন্য দিকে, মাইথন-কল্যাণেশ্বরী হয়ে ধানবাদে যাওয়ার রাস্তা সরাসরি এই রাজ্য সড়কের সঙ্গে যুক্ত। এই রাস্তাই চৌরঙ্গিতে গিয়ে মিশেছে জাতীয় সড়কে। যোগাযোগের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায় প্রতিনিয়ত ছোট থেকে বড় বিভিন্ন গাড়ি, ডাম্পার, ট্রাক চলাচল করে। কুলটি থানা এলাকার সামান্য অংশ ছাড়া এই রাস্তার সিংহভাগ এলাকা রয়েছে সালানপুর থানার অধীনে। কিন্তু থানার তরফ থেকে এই বিস্তীর্ণ পথের কোথাও স্থায়ী ভাবে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেই। অন্যান্য থানা এলাকার মতো এখানে ট্র্যাফিক বিভাগের কোনও ওসি নেই।
দিনকয়েক আগে দেন্দুয়ার কাছে এই রাস্তায় ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক আদিবাসী যুবকের। মৃতের ক্ষতিপূরণের দাবিতে তখন ১২ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখা হয়। মাস দেড়েক আগে দেন্দুয়া থেকে রেল গেটে যাওয়ার পথে মোটর বাইক উল্টে গুরুতর জখম হন দু’জন। তাঁদের একজন মারা যান ধানবাদে। এই রেল গেটের সামনের এলাকার রাস্তা অত্যন্ত বেহাল। অভিযোগ, রেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি। রূপনারায়ণপুর রেল ওভারব্রিজে স্পিড ব্রেকারে জল আনতে যাওয়া এক যুবক ব্যালান্স হারিয়ে মোটর বাইক নিয়ে উল্টে মারা যান।
গত এক বছরে এই রাস্তায় অন্তত এক ডজন দুর্ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা জেমারি থেকে দেন্দুয়া লেভেল ক্রসিং গেট পর্যন্ত। প্রতিদিন যাতায়াতে চোখে ধরা পড়ে, রূপনারায়ণপুর স্টেট ব্যাঙ্কের উল্টো দিকে রাস্তা প্রায় দখল করে রয়েছে দোকানের সারি। এই অবস্থা চলেছে একেবারে চিত্তরঞ্জন রেল শহরের তিন নম্বর গেট পর্যন্ত। এখানে রাস্তার উপরেই কার্যত গড়ে উঠেছে গাড়ি, মোটর বাইক রাখার স্ট্যান্ড। একই অবস্থা ডাবর মোড়, সামডি সমেত বিভিন্ন এলাকায়। ডাবর মোড় দখল করে রেখেছে টোটো, অটো।
বড় দুর্ঘটনা ঘটলে মাঝে মধ্যে দু’এক জন সিপিভিএফকে দায়িত্ব দেয় পুলিশ। কিছু দিন পর সেই সিপিভিএফকে তুলেও নেওয়া হয়। ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি বিজয় সিং বলেন, ‘পুলিশ, প্রশাসনের কাছে আমরাও বলব, এই সব এলাকায় অবশ্যই ট্র্যাফিক পুলিশের ব্যবস্থা রাখা হোক।’ বিজেপি জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘সরকারি ফুটপাথ, জমি একের পর এক দখল হয়ে যাচ্ছে।
অবৈধ টোটো, অটোর সংখ্যাও বাড়ছে। এসব কারণেই বাড়ছে দুর্ঘটনা। কিন্তু পুলিশ, প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।’ ডিসি ট্র্যাফিক আনন্দ রায় বলেন, ‘চিত্তরঞ্জন, সালানপুরে ট্র্যাফিক গার্ডের কোনও ব্যবস্থা আমাদের নেই। আগামী দিনে এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা যেতে পারে।’ তৃণমূল নেতার ছেলের মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ট্র্যাফিকের এসিপি ২ (কুলটি) এবং সালানপুর থানার আইসি। মৃত্যুর সঠিক কারণ ওঁরা বলতে পারবেন।’