সোনা গায়েব হয়েছে বুঝতে পেরে রাজকোটের ওই মহাজন নলহাটির নিমগ্রাম ও বেলুর গ্রামের কয়েক জন চেনা কারিগরকে বলে, রনির বাড়ি গিয়ে সেই সোনা নিয়ে আসতে। তারা রনির সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে সোনা নিয়ে আসার কথা স্বীকার করে। রনির দাবি, পরে সেই সোনা রামপুরহাটের এক আইনজীবীর মাধ্যমে রাজকোটে পাঠিয়ে দেয় সে। সে জন্যই রাজকোটের মহাজন তাদের বিরুদ্ধে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।
কিন্তু এর পরই ঘটনার মোড় অন্য দিকে ঘুরে যায়। শুক্রবার দুপুর নাগাদ মুর্শিদাবাদ থেকে জনা পাঁচেক লোক আচমকা হাজির হয় ভুজুং গ্রামে, শেখ রনির বাড়িতে। তারা রনিকে বলে, সে রাজকোট থেকে যে সোনা এনেছে, তা তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। রনি সোনা ইতিমধ্যেই ফেরত পাঠিয়েছে বলে জানালেও তা বিশ্বাস করতে চায়নি ওই পাঁচ জন। এ নিয়ে বচসার পর তারা শেরপুরে শেখ রাকেশের বাড়িতে যাবে বলে রনিকে গাড়িতে তোলে। কিন্তু অভিযোগ, গাড়ির মধ্যে রনির কপালে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে সোনা আদায়ের জন্য চাপ দেয় তারা। হুমকি দেয়, সোনা না পেলে তাকে মেরে ফেলা হবে।
তাকে অপহরণ করা হচ্ছে বুঝতে পেরে রনি চিৎকার করতে শুরু করে। ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বীরভূম-মুর্শিদাবাদের সংযোগস্থলে কাঁটাগড়িয়া মোড়ের কাছে চলন্ত গাড়ি থেকে চিৎকার ভেসে আসতে শুনে স্থানীয়রা লোহাপুর ক্যাম্পে খবর দেন। এরপরই পুলিশ সক্রিয় হয়ে গাড়িটি আটকায়। গ্রেপ্তার করা হয় ৫ জনকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা ঘটনার কিনারা করতে চাইছে পুলিশ।
ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছেন রনির মা রেজিনা বিবি। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে সোনা নিয়ে এলেও তা আইনজীবী মারফত ফেরত পাঠানো হয়েছে। তার পরেও সোনার লোভে ওকে টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। আমার ছেলেকে অপহরণের চেষ্টা হয়।’ রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ধীমান মিত্র বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কী পরিকল্পনা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্থানীয় এই কারিগরদের থেকেই খবর পায় দুষ্কৃতী দলটি। তার পরই সোনা ঝেঁপে দেওয়ার তালে রনিকে অপহরণের ছক কষে তারা।