স্থানীয় সূত্রে খবর, মধুর জ্বর এসেছিল দিন সাতেক আগে। পর দিন রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির রিপোর্ট পজিটিভ আসে। জ্বরের সঙ্গে বমি এবং শ্বাসকষ্ট থাকায় তাঁকে বৃহস্পতিবার ভর্তি করা হয় পুরসভার হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শুক্রবার রাতে স্থানান্তরিত করা হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। সেখানেই শনিবার সকাল এগারোটা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর।
বিকেলে বাড়িতে দেহ পৌঁছনোর পর অবশ্য প্রতিবেশীদের অনেকে বলতে শুরু করেন, এই তো হাত নড়ছে। মেয়ে বেঁচে আছে। তড়িঘড়ি মধুকে ফের পুরসভার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের গেটে ভিড় জমান স্থানীয়রা। তবে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, অনেক আগেই মারা গিয়েছে ওই কিশোরী।
মতিঝিলেরই বাসিন্দা পুলিশকর্মী প্রীতমের জ্বর এসেছিল গত শনিবার। দু’দিন পর রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। পুরসভার আধিকারিকদের দাবি, বাড়িতে থেকে সেরে উঠেছিলেন ওই যুবক। কাজেও যোগ দিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে হঠাৎই বমির পাশাপাশি গা, হাতপায়ে ব্যথা শুরু হয় প্রীতমের। সাতগাছির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানেই শনিবার ভোরে মারা যান প্রীতম।
ডেঙ্গি থেকে সেরে ওঠার পরে অন্তত ৭ দিন বিশ্রাম নেওয়ার কথা বরাবরই বলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তা না করে প্রীতম কাজে যোগ দেওয়াতেই বিপত্তি বলে মনে করছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস। তাঁর বক্তব্য, ‘ডেঙ্গি সেরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কাজে যোগ দেওয়াটা ঠিক নয়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম জরুরি। সেটা না হলে অনেক সমস্যা হতে পারে।’
স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, রাজ্যে এই মুহূর্তে ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা এবং সংক্রমণের হারে শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সংক্রমণের হার ১৩.৮৫ শতাংশ। এই জেলাতেই দক্ষিণ দমদম। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কেষ্টপুর এবং বাগজোলা খালের আশপাশ ঠিক ভাবে সাফাই না করা এবং বাড়ি-বাড়ি অভিযানে ঘাটতির ফলেই পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠছে।
যদিও দক্ষিণ দমদমের চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাসের দাবি, ‘আমাদের তরফে যা করার সবই করা হচ্ছে। কিন্তু বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে জল জমিয়ে রাখার প্রবণতা বন্ধ করা যাচ্ছে না। সে কারণেই সংক্রমণ বাড়ছে।’