বোর্ড গঠন না করতে পারার আশঙ্কা করে বিভিন্নভাবে জয়ী পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীদের হুমকি দেখাতে থাকে বলে অভিযোগ বিজেপির। প্রার্থী সুপর্ণা বর্মনকেও ভোটে জেতার আগের থেকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভোটে জেতার পর তৃণমূল এবং প্রশাসন যৌথভাবে তার স্বামীকে ডেকে বিভিন্নভাবে হুমকি এবং টাকার প্রলোভন দেখাতে থাকে। অভিযোগ ওঠে, ভোটের আগেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে BJP প্রার্থীর স্বামী সিভিক ভলান্টিয়ারকে দূরের থানায় ডিউটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, শান্তিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তিনি নিজেই এসে সিভিক ভলান্টিয়ারকে ডেকে তৃণমূলে যোগদানের বিষয়ে কথা বলেন বলে দাবি। অবশেষে তৃণমূলে যোগদান না করায় গত সাত তারিখে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার কার্তিক হালদার বলেন, আমার স্ত্রী যেহেতু BJPর সমিতি পদপ্রার্থীদের জয়লাভ করেছে সেই কারণেই শাসক দল এবং প্রশাসনের তরফ থেকে দফায় দফায় হুমকি দেখায় আমাদের। প্রশাসনের তরফ থেকেও আমাকে ডেকে বলা হয় তৃণমূলে যোগদান করার কথা। যেহেতু আমরা ওই কথাতে রাজি হয়নি সেই কারণেই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে আমার চাকরিটা নিয়ে নিল প্রশাসন। এ বিষয়ে এসপি সাহেবকে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন সিভিক ভলান্টিয়ার।
অন্যদিকে,চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ নিয়ে BJPর সমিতির প্রার্থী সুপর্ণা বর্মন বলেন, ‘আমি সমিতির প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়ানোর পর থেকেই বিভিন্ন দিক থেকে হুমকি আসছিল। ভোটে জেতার পর প্রশাসন এবং শাসক দলের তরফ থেকে দফায় দফায় প্রাণে মারার হুমকি এবং টাকার প্রলোভন দেখানো হচ্ছিল। আমরা রাজি না হওয়ায় অবশেষে আমার স্বামী চাকরিটা চলে গেল।’
তৃণমূলের তরফ থেকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কথা অস্বীকার করে শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী বলেন, তিনি একমাস ধরে কোথায় ছিলেন কেন ডিউটি করেননি। যদি প্রশাসনিক চাপে এবং শাসকদলের ভয়ে ডিউটি না করে থাকেন তাহলে আগে কেন অভিযোগ জানায়নি। যেহেতু এক মাস ধরে কাজ করেন তিনি সেই কারণে প্রশাসনিক নিয়মেই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়েছে।। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। আর BJP থেকে যে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা পুরোটাই ভিত্তিহীন।
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে BJP সংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, শান্তিপুর থানার ওসি তৃণমূলের প্রমোশন নিয়ে এসেছেন। এর আগেও আমরা একাধিক বার বলেছি তিনি তৃণমূলের দলদাস হয়ে কাজ করছেন। একজন প্রশাসনের আধিকারিক হিসেবে কিভাবে শাসক দলে যোগদানের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এই ঘটনা নিয়ে বড় পদক্ষেপে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন রানাঘাট জেলা পুলিশ সুপার ডক্টর কে কান্নান। তিনি বলেন সিভিক ভলান্টিয়ার একটি টেম্পোরারি কাজ। সেখানে ডিউটি না করলে স্বাভাবিকভাবেই চলে যাওয়ার একটা আশঙ্কা থাকে। যেহেতু এক মাস ধরে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার কাজে যোগদান করেনি সেই কারণে প্রশাসনিক নিয়ম মেনে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।