CV Ananda Bose : ‘ভ্যাম্পায়ার’-এর পালটা বোসের ‘বৌদ্ধিক সন্ত্রাস’, ‘ভয়’ দেখাল কে? নয়া চাপানউতোর – five incumbent vc were intimidated into resigning which cv ananda bose compared to intellectual violence


এই সময়: সাসপেন্স-এর পর্দা সরল না রবিবারও। রাজ্যপাল তথা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোস শনিবার মধ্যরাতে একযোগে চিঠি পাঠিয়েছেন দিল্লি ও নবান্নকে। কিন্তু তা নিয়ে রবিবারও মুখ বন্ধই রাখল নবান্ন, দিল্লি এবং রাজভবন। এরই মধ্যে রাজ্যপালের নয়া অভিযোগ এসেছে সামনে। বোসের দাবি, তাঁর নিযুক্ত যে পাঁচ জন ভারপ্রাপ্ত ভিসিকে ভয় দেখিয়ে পদত্যাগ করানো হয়েছে, তাঁদের এখনও ভয় দেখাচ্ছে সরকার। এতে তাঁরা তটস্থ বলে দাবি রাজ্যপালের। একে তিনি ‘ইন্টেলেকচুয়াল ভায়োলেন্স’ বা ‘বৌদ্ধিক সন্ত্রাস’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন। যা নিয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কটাক্ষ ধেয়ে আসতে দেরি হয়নি।

Bikash Bhawan : কার হুমকিতে ইস্তফা? ভিসিদের থেকে জানতে চায় শিক্ষা দফতর
দিন কয়েক আগে রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, তাঁর নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ভিসিদের ভয় দেখিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করেছেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা। তিনি কাউকে সরাননি। আচার্যের এই ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যবস্থা নেয় উচ্চশিক্ষা দপ্তর। তাদের তরফে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদত্যাগী ভারপ্রাপ্ত ভিসিদের চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যপালের অভিযোগ প্রসঙ্গে আজ, ১১ তারিখের মধ্যে জবাব তলব করা হয়। পদত্যাগীদের বলা হয়েছে, কোন অফিসার তাঁদের হুমকি দিয়েছেন বা ভয় দেখিয়েছেন এবং কেন তাঁরা পদত্যাগ করেছেন, তা বিশদে বিকাশ ভবনকে জানাতে হবে।

CV Ananda Bose : সংঘাত-বৃত্তে শিক্ষামহলও, ভিডিয়ো-বার্তায় প্রাক্তন ভিসিদের নিশানা বোসের
এরপর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু পাল্টা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারদের সঙ্গে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের বৈঠকের আগে রাজ্যপাল ও রাজভবনের তরফেই ভয় দেখানো হয়েছে। যার মুখে অনেক রেজিস্ট্রারই দপ্তরের বৈঠকে যেতে পারেননি। শনিবার সকালে রাজ্যপাল ‘মধ্যরাতে অ্যাকশন’-এর কথা বলায় কারও নাম না করে ‘ভ্যাম্পায়ার’ তোপও দাগেন ব্রাত্য। অনেকের মতে, সেটা আদতে রাজ্যপালকেই কটাক্ষ করে বলা।

CV Ananda Bose : আচার্যের ভূমিকার প্রতিবাদ, রাজভবনের সামনে অবস্থান
এ সবের মধ্যেই রবিবার একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে দেন বোস। সেখানে দাবি করেন, ‘পদত্যাগী ভিসিরা আমাকে যা বলেছেন, সেটা অত্যন্ত গোপন বিষয়। এটা প্রকাশ্যে চলে এলে তাঁরা আরও সমস্যায় পড়বেন। ভুক্তভোগীদের থেকে জেনেছি, তাঁরা এখনও চাপের মুখে রয়েছেন। শিক্ষা দপ্তর লিখিত ভাবে তাঁদের থেকে জানতে চেয়েছেন যে তাঁরা আমাকে কী বলেছিলেন।’ রাজ্যপালের মতে, ‘এটাও এক ধরনের ইন্টেলেকচুয়াল ভায়োলেন্স।’ এ দিকে এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছে শাসকদলের ছাত্র সংগঠন ‘টিএমসিপি’। আজ, সোমবার থেকে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে সব ইউনিভার্সিটির সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে তারা।

C V Ananda Bose : ‘শান্তিগোপালের পদ নয়, কী প্রয়োজন নাটকের…?’ মধ্যরাতের চিঠি নিয়ে রাজ্যপালকে নিশানা জয়প্রকাশের
রাজ্যপালের এই বক্তব্যে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাঁর ‘অতিসক্রিয়তা ও পক্ষপাত’-এর বিরুদ্ধে তৈরি র‍াজ্যের প্রাক্তন উপাচার্যদের মঞ্চ ‘দ্য এডুকেশনিস্ট ফোরাম’-এর তরফে ওমপ্রকাশ মিশ্রর দাবি, রাজ্যপাল সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করছেন। তাঁর কথায়, ‘ওই পাঁচ ভিসির মধ্যে মধ্যে অন্তত তিনজনকে রাজ্যপালই সরাসরি সরিয়ে দিয়েছেন। ভিসিরা দপ্তরে গিয়ে দেখেন, তাঁদের পদ চলে গিয়েছে।’ ওমপ্রকাশের সংযোজন, ‘উচ্চশিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন। দপ্তরেরও অধিকার আছে, কেন রাজ্যপাল এমন অভিযোগ করলেন, তার খোঁজ নেওয়া। সেটা করে দপ্তর ভুল করেনি।’

CV Ananda Bose : উপাচার্য কে? বোস-বাক্যে ধন্দে ইন্ধনই
শনিবার রাতে তাঁর পাঠানো জোড়া চিঠির ব্যাপারে অবশ্য সংবাদমাধ্যমের ইন্টারভিউয়ে রাজ্যপাল কোনও কথা বলেননি। তবে দাবি করেছেন, তাঁর কাছে বা তাঁর দপ্তরের অধীনে বিধানসভায় পাশ হওয়া কোনও বিল আটকে নেই। বোসের কথায়, ‘বলা হচ্ছে যে আমার কাছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত সার্চ কমিটির বিলটি এসে পড়ে আছে।

আসল কথা হলো, বিধানসভার নিয়ম অনুযায়ী, বিলের একটি তর্জমা রাজভবনে পাঠানো হয়। বারবার বলা সত্ত্বেও সেই তর্জমা আমাকে এখনও পাঠানো হয়নি।’ একই সঙ্গে তিনি জানান, ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট রেগুলেটরি কমিশন বিল, অ্যানিমাল অ্যান্ড ফিশারি সায়েন্সেস বিল, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিল, হেলথ সায়েন্স বিল, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিল নিয়ে নানা পর্যবেক্ষণ এবং কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন মামলার নির্দেশ সংক্রান্ত ব্যাখ্যা চাওয়া হলেও সরকার তা দেয়নি।

CV Ananda Bose : ‘সংবিধানকে অশ্রদ্ধা করা হচ্ছে…মন্ত্রীরাও সামিল’, তোপ রাজ্যপালের
এ সব প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘কোনও ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করা ঠিক হচ্ছে না। বিজেপি-কে রাজনৈতিক ভাবে অক্সিজেন দেওয়া, উপাচার্য নিয়োগের নামে বিজেপি-র স্বার্থসিদ্ধি এবং সিস্টেমটাকে বিশৃঙ্খলা দিয়ে ভরিয়ে দেওয়াটা বিজেপি-র গেমপ্ল্যান অনুযায়ী করছেন উনি।’ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা জারি রেখেছেন শিক্ষামন্ত্রীও। এ ব্যাপারে রবিবার কারও নাম না করে বোস বলেন, ‘একজন মন্ত্রীই তো সর্বেসর্বা হতে পারেন না।

Governor Of West Bengal : ‘মধ্যরাতের অ্যাকশন!’ দুই গোপন চিঠিতে সই রাজ্যপাল বোসের
মন্ত্রী যা বলছেন, তার দায় গোটা ক্যাবিনেটকেই নিতে হবে। সেই বিষয়টা যেন তিনি মাথায় রাখেন।’ কুণালের পাল্টা অভিযোগ, ‘শিক্ষামন্ত্রী সরব হয়েছেন বলেই রাজ্যপাল তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলছেন। এটাও বিজেপির কথা মতোই তিনি করছেন।’ যদিও প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্যপালের পাশে দাঁড়িয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং সাংসদ দিলীপ ঘোষ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *