জানা গিয়েছে, কলকাতার একটি কল সেন্টারে বসে প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন যুবককে মেসেজ করে বন্ধুত্ব করার প্রলোভন দেখাতে হচ্ছে ওই তরুণীকে।
ভুল জায়গায় এসে পড়েছেন সেটা বুঝতে পেরেছেন তরুণী। বাড়ি ফিরতে চাইছেন। কিন্তু কড়া নজরদারির মধ্যে থাকায় বাড়ি ফেরা সম্ভব হচ্ছে না।
পরিবারের লোকেরা সমস্ত ঘটনার কথা উল্লেখ করে বুদবুদ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বছর আগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর থেকে ঘরেই ছিলেন ওই তরুণী। বাবা ছোটবেলাতেই এই পরিবারের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তার পর থেকে মায়ের সঙ্গে মামার বাড়িতে থাকেন ওই তরুণী। স্বাবলম্বী হতে কাজের খোঁজ করছিলেন।
পাশের গ্রামের বাসিন্দা এক সহপাঠী গত ৩ বছর ধরে কলকাতায় থাকে। সম্প্রতি সে গ্রামে এসে তরুণীকে কলকাতায় কাজের সন্ধান দেয়। কাজের খোঁজ পেতেই বাড়িতে কিছু না-বলে যাবতীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র নিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর কলকাতায় চলে যান তিনি। সঙ্গে নিয়েছিলেন কন্যাশ্রী প্রকল্পে পাওয়া ২৫ হাজারের মধ্যে ১৫ হাজার টাকাও।
পরিবারের লোকেরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও তার সন্ধান পায়নি। কলকাতায় যাওয়ার পরে দু’দিন পরেই গত ৮ তারিখ তরুণী বাড়িতে ফোন করে জানান সে একটি বাজে চক্রের খপ্পরে পড়েছে। গ্রামের এক দাদাকে ফোন করে জানান, কখনও নিউ ব্যারাকপুর আবার কখনও অন্য কোনও জায়গায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে তরুণী জানান, অফিসে বসে মোবাইল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার পর তাদের সঙ্গে চ্যাট করতে হচ্ছে।
তাদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। তরুণীর মা বলেন, ‘যেখানে কাজে ঢুকেছে জায়গাটা ভালো নয়। কয়েকবার ফোন করেছিলাম। এক মহিলা ফোন ধরেছিল। মেয়ের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলতে পেরেছি। বুঝতে পারছি, বাজে কোনও চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। পুলিশকে সব জানিয়েছি। খুব চিন্তায় আছি।’
তরুণীর মামীর বক্তব্য, ‘পাশের গ্রামের যে মেয়েটি আমাদের ভাগ্নিকে কলকাতায় নিয়ে গিয়েছে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। মেয়েটি কী কাজ করে তার বাবা-মা জানে না বলে জানিয়েছেন। ভাগ্নির সঙ্গে পড়ত মেয়েটি। একবার আমাদের বাড়িতে এসেছিল।’ গ্রামের যে দাদাকে তরুণী ফোন করেছিলেন তিনি বলেন, ‘ওকে মোবাইলে লোকেশন পাঠাতে বলেছিলাম। তাতে দেখা যাচ্ছে নিউ ব্যারাকপুরে। পুলিশকে বলব দ্রুত আমাদের গ্রামের মেয়েকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হোক।’
ঘটনা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল বুদবুদ থানার পুলিশ। এসিপি সুমন জয়সওয়াল বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা জানি। ওই তরুণীকে দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।’