স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বিতল ওই বিশাল আকারের হাসপাতালে এক্সরে মেশিন, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন, প্যাথোলজি ল্যাব, অপারেশন থিয়েটার, লেবার রুম সহ অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। কিন্তু অব্যবহারের কারণে দিনের পর দিন তা অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে এই হাসপাতালে কেবল চারজন স্বাস্থ্য কর্মী, চারজন নিরাপত্তারক্ষী ও তিনজন সাফাইকর্মী রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুর প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে হাসপাতালটি ভূত বাংলোতে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসীরা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ফের ওই হাসপাতালটি পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। যদিও দুর্গাপুর পুরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালটি পুনরুজ্জীবিত করতে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। পুরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালের হাল ফেরাতে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে তারা আলোচনা করছেন।
স্থানীয় ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডে পারুলিয়া এলাকায় প্রধান রাস্তার পাশেই রয়েছে ওই মাতৃসদন হাসপাতালটি। বাম আমলে ২০০২ সালে হাসপাতালটির উদ্বোধন করেছিলেন দুর্গাপুর পুরসভার তৎকালীন মেয়র রথীন রায়। দুর্গাপুর শহর ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের সীমান্তবর্তী এলাকায় ওই মাতৃসদন হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছিল। মূলত দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার কথা মাথায় রেথে চালু করা হয়েছিল এই হাসপাতাল। স্থানীয়দের দাবি, একসময় এই হাসপাতালে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, মেডিসিন ও হৃদ রোগ বিশেষজ্ঞ সহ প্রায় পাঁচজন চিকিৎসক ছিলেন। নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীও পর্যাপ্ত ছিল। এমনকী এই হাসপাতালে শিশুদের জন্মও হত। বহির্বিভাগেও অনেক রোগী আসতেন। ১০ বছর পরিষেবা পাওয়ার পর ২০১২ সালে তা হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায়।
হাসপাতালের বেহাল দশা নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। পশ্চিম বর্ধমান জেলার সিপিএমের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘বাম আমলে বেশ কয়েকটি এলাকায় এইরকম ছোট ছোট হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছিল। দরিদ্র মানুষদের কথা মাথায় রেখে তা তৈরি করা হয়। বর্তমানে রাজ্য সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবাটাকে সম্পূর্ণ বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছে।’ অন্যদিকে পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্যা তথা প্রাক্তন স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ রাখি তিওয়ারি বলেন, ‘আমরা ওই মাতৃসদনটিতে পরিষেবা চালু করার বিভিন্ন রকমভাবে উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি। বেসরকারি কোনও সংস্থার মাধ্যমে আমরা হাসপাতালটি চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছি। কোনও সংস্থা যদি এই বিষয়ে আগ্রহী থাকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছি।’