Saktigarh Langcha : রসে টইটুম্বুর শক্তিগড়ের ল্যাংচা নিশ্চয় খেয়েছেন! কবে-কীভাবে এই নামকরণ? রইল ইতিহাস – purba burdwan saktigarh langcha has beautiful history know in details


কলকাতা থেকে বর্ধমান যাওয়ার পথে রাস্তায় পড়ে শক্তিগড়। কলকাতা থেকে বর্ধমান, বা বর্ধমান থেকে কলকাতা, যাতায়াতের পথে এই শক্তিগড়ে বিরতি নেন বেশিরভাগ মানুষ। সেরে নেন হালকা জলযোগ। আর সেই জলযোগে প্রায় সবার পাতেই যে খাবারটি চোখে পড়ে তা হল ল্যাংচা। পূর্ব বর্ধমানের সীমানা ছাড়িয়ে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে শক্তিগড়ের এই ল্যাংচার নাম।

জেনে নিন ল্যাংচার ইতিহাস
তবে শুধু শক্তিগড়ই নয়, ল্যাংচার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নদিয়ার কৃষ্ণনগরের নামও। কারণ ল্যাংচার জনপ্রিয়তার নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে কৃষ্ণনগরের। সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দুই জায়গায় রাজ পরিবারের নামও। জনশ্রুতি অনুযায়ী, কৃষ্ণনগরের রাজকন্যার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বর্ধমানের রাজপুত্রের। বিয়ের কিছুদিন পর রাজকুমারী অন্তঃসত্ত্বা হন। কৃষ্ণনগরের রাজা তার কন্যাকে নিয়ে যান নিজের বাড়িতে। সবার মনে আনন্দ, কারণ পরিবারে নতুন অতিথি আসছে। কিন্তু এমন খুশির মাঝে তৈরি হয় এক নতুন বিপত্তি। মুখের রুচি হারিয়ে ফেলেন রাজকন্যা। রাজবাড়ীর রাজভোগও তাঁর বিস্বাদ মনে হতে থাকে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে রাজা পড়লেন মহা দুশ্চিন্তায়। কী করা যায়, উপায় খুঁজতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হল। ডাকা হল রাজ্যের বড় বড় হাকিম-কবিরাজদের।

Saktigarh Langcha : ফের চালু হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের মিষ্টি হাব? তৎপর প্রশাসন, তবু সমস্যা সেই…
এরই মাঝে রাজকন্যা নিজেই তাঁর বাবাকে জানান, তাঁর শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন এক ময়রা, তাঁকে একটি কালো রঙের ভাজা মিষ্টি রসে ডুবিয়ে রাখতে দেখেছিলেন তিনি। সেই মিষ্টি খেলেই নাকি তাঁর মুখে রুচি ফিরতে পারে বলে বাবাকে জানান রাজকন্যা। কিন্তু তাঁর কন্যা সেই ময়রার নাম বলতে পারেননি। শুধু বলেছিলেন, ময়রাটির একটি পায়ে সমস্যা ছিল, তিনি খুঁড়িয়ে চলতেন।

এরপরেই রাজা বর্ধমানে তাঁর দলবল পাঠালেন সেই ময়রাকে খুঁজে আনতে। অবশেষে তাকে খুঁজে নিয়ে যাওয়া হল কৃষ্ণনগরের রাজবাড়িতে। তিনি রাজকন্যার জন্য বানালেন সেই ভাজা মিষ্টি এবং তা রসে ডুবিয়ে নরম করে পরিবেশন করলেন রাজকন্যাকে। শুধু রাজকন্যাই নয়, সেই মিষ্টির স্বাদে মজে গেলেন স্বয়ং কৃষ্ণনগরের রাজাও। মিষ্টি খেয়ে রাজকন্যার মুখে রুচি ফিরেছে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ল চারিদিকে। তবে সেই মিষ্টির নাম কী, তা কেউই জানতেন না। অবশেষে সেই ময়রা, যিনি এই মিষ্টি বানিয়েছিলেন, তিনি যেহেতু ‘লেংচে’ হাঁটতেন, কৃষ্ণনগরের রাজা এই মিষ্টির নামকরণ করলেন ল্যাংচা। ময়রাকে খুশি হয়ে প্রচুর উপহারও দেন রাজা।

বিহার-ঝাড়খণ্ডের ‘রসমাধুরী’ কিন্তু বাংলার রসমাধুরীর থেকে একেবারেই আলাদা, রইল রেসিপি
এলাকার প্রবীণদের কেউ কেউ বলেন, কৃষ্ণনগর থেকে বর্ধমানে ফিরে শক্তিগড়ে ল্যাংচার দোকান চালু করে ওই ময়রা। তারপর থেকেই ল্যাংচার বিক্রি শুরু বলে মনে করা হয়। ল্যাংচার প্রধান উপকরণই হল ছানা। তার সঙ্গে ময়দা ও চালেরগুঁড়ি ভালো করে মিশিয়ে মেখে নিতে হয়। সেই মিশ্রণের সঙ্গে খোয়া ক্ষীর দেওয়া হয় গুণগত মান ও স্বাদ বাড়াতে। খোয়া ক্ষীর মিশিয়ে মিশ্রণটিকে ল্যাংচার আকার দিয়ে প্রথমে ভেজে নেওয়া হয়। তারপর সেটিকে গরম রসে ভেজানো হয়। ব্যাস তাহলেই তৈরি ল্যাংচা। বর্তমানে সেই শক্তিগড়ই ‘ল্যাংচার আতুড়ঘর’।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *