সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে ভারতের পৌরহিত্যে মহাধুমধামে শেষ হয়েছে জি২০ বৈঠক। অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা দেশে ফিরে যেতেই ফের এক প্রাক্তন আমলার রাজনীতিতে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল জল্পনা। এবং তাৎপর্যপূর্ণভাবে তাঁর সঙ্গে রয়েছে বাংলার যোগ। জি২০ বৈঠকের মুখ্য সমন্বয়কারী ও প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং থেকে প্রার্থী করা হতে পারে বলে গুঞ্জন রাজনৈতিক মহলে। যদিও বিজেপির তরফে এখনও এই নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। সবটাই জল্পনার স্তরে রয়েছে
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসে যোগ দেওয়ার পর থেকে শ্রিংলা ভারতীয় কূ়টনীতিকে সঠিক দিকে পরিচালিত করেছেন। তাই আগামী দিনে বিজেপি যদি তাঁকে রাজনীতিতে নিয়ে আসে, তবে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
দক্ষ কূটনীতিক হওয়ার পাশাপাশি গোর্খা সমাজের প্রতিনিধি শ্রিংলা
পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিঙের সঙ্গে নাম জড়িয়ে শ্রিংলার। কিন্তু তিনি কখনও দার্জিলিঙে থাকেননি। স্বাভাবিকভাবে হিন্দি, ইংরেজি ও একাধিক বিদেশি ভাষার পাশাপাশি নেপালিতেও কথা বলতে দক্ষ তিনি। দার্জিলিং ও সিকিমে শ্রিংলা পরিবারের আলাদা সম্মান রয়েছে। তাঁর বাবা সিকিমের বৌদ্ধ এবং মা হিন্দু নেপালি। গোর্খারা হর্ষবর্ধনকে আলাদা চোখে দেখেন। কারণ গোর্খা সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে হাতে গোণা কয়েকজন কেন্দ্রীয় প্রশাসনের এই পর্যায়ে পৌঁছতে পেরেছেন।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলার বিনয়ী ব্যবহার তাঁকে বাকিদের থেকে আলাদা করে। যে কোনও বিপদে তিনি সবসয়ম দার্জিলিঙের মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এমনকী করোনার সময়ও দার্জিলিং ও সিকিমের যেসব বাসিন্দা কর্মসূত্রে বিদেশে আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের ফেরাতেও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন শ্রিংলা। দার্জিলিঙে না থেকেও তিনি কখনও নিজের শিকড়কে ভুলে যাননি।
রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্কও
২০০৯ সাল থেকে দার্জিলিং আসনটি ধরে রেখেছে বিজেপি। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে যুগলবন্দিতে ২০০৯-এ যশবন্ত সিং, ২০১৪-এ সুরিন্দর সিং অহলুওয়ালিয়া ও ২০১৯-এ রাজু বিস্তা বিজেপির টিকিটে দার্জিলিং থেকে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু এদের একজনও দার্জিলিঙের ভূমিপুত্র নন। একাধিকবার প্রার্থী চয়ন নিয়ে ‘বহিরাগত’ প্রশ্ন উঠেছে। আসন্ন ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সমর্থন এই পাহাড়ি শহরে ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। সেই কারণে শ্রিংলাকে প্রার্থী করে বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি।