এই ঘোষণার পর থেকেই নতুন করে কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখছে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি। যে জমি ঘিরে বাংলার শিল্প আকাশে ফের উঠছে আশার সূর্য, গত কয়েক দশকে সেই জমিই সাক্ষী হয়েছে একাধিক ঘটনার।
কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর থেকে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ
প্রসঙ্গত, বাম আমলে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ইস্পাত এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির জন্য ৪৩০০ একর জমি জিন্দাল গোষ্ঠীকে দেন। ২০০৮ সালে ২ নভেম্বর সেই কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথেই ঘটে ভয়াবহ ঘটনা।
জিন্দালদের কারখানার শিলান্যাস অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে মাওবাদী হামলার মুখে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর কনভয়ের কাছেই ফাটানো হয় ল্যান্ডমাইন। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বুদ্ধবাবু। তাঁর কোনও আঘাত লাগেনি। সেদিন অন্য আর একটি কনভয়ে ছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান ও রাজ্যের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন। পরে জানা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে হত্যার উদ্দেশেই করা হয়েছিল ওই পরিকল্পনা।
ওই ঘটনার পর রাজ্য রাজনীতি আবর্তিত হয় শালবনি ঘিরে। সংগঠিত হয় লালগড় আন্দোলন। পুলিশের অত্যাচারের প্রতিবাদে গড়ে ওঠে পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনগণ কমিটি। অশান্ত হয়ে ওঠে শালবনির পরিস্থিতি। এমন অস্থির অবস্থায় জিন্দাল গোষ্ঠী ইস্পাত এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল করে।
পরে তৃণমূল জমানায় ওই জমির মাত্র ১৩৫ একরে সিমেন্ট কারখানা গড়েন জিন্দালরা। মোট জমির ১৫০০ একর রেখে বাকি জমি তারা সরকারকে ফিরিয়ে দেন। ২০১৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধন করেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘোষিত ইস্পাত কারখানার জন্য জিন্দালদের ফিরিয়ে দেওয়া জমি থেকেই জমি দেওয়া হচ্ছে । দশকের বেশি সময় পেরিয়ে আবারও রাজ্যে ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্র হতে চলেছে শালবনি।