স্কুলেই খেলার প্রশিক্ষণ
পান্ডুয়ার বৈঁচির মেয়ে রেখা তুরি। ছোটো থেকেই খেলার প্রতি আগ্রহী তাঁর। জিমনাস্টিক, ফুটবল খেলতে পছন্দ করে রেখা। কিন্তু সেরকম সুযোগ হয়না। বৈঁচি বালিকা বিদ্যালয় সেই সুযোগ করে দেয়। স্কুলে তাইকোন্ডো খেলা শেখানো হয়। স্কুলে শিখেই এখন জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় একের পর এক স্বর্ণ পদক নিয়ে আসছেন রেখা।
স্বর্ণ পদক জয়
চলতি মাসে মেঘালয়ের শিলং এ অনুষ্ঠিত জাতীয় সিনিয়ার তাইকোন্ডো চ্যাম্পিয়ানশিপে ৫২ কেজি বিভাগে স্বর্ণ পদক পান রেখা। তার আগে দিল্লিতে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ানশিপে নেপাল থেকেও স্বর্ণ পদক নিয়ে আসেন। আগামী অক্টোবরে আবার নেপালে আন্তর্জাতিক স্তরে তাইকোন্ডো খেলায় অংশ নেবেন রেখা।
অভাবে সংসার
চার ভাইবোন, বাবা-মা মিলে ছয়জনের অভাবের সংসার। বাবা রাজু তুরি ক্ষুদ্র চাষি। চাষ করে যা আয় হয় তা দিনে কোনওমতে দিন গুজরান হয়। রেখার খেলার জন্য আলাদা করে কিছু করতে পারেন না। তাইকোন্ডোর মত খেলায় শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন। তার জন্য চাই ভালো খাওয়া-দাওয়া। অনুশীলনের জন্য চাই ভালো প্রশিক্ষণ। সেসব বড় বালাই। তবুও অলিম্পিকে যেতে চান রেখা। ভারতের হয়ে পদক আনতে চান।
রেখা কী জানাল?
রেখা জানাল, ছোট থেকে খেলার প্রতি আগ্রহ। কিন্তু সঠিকভাবে প্রশিক্ষক না পাওয়ার জন্য অনেক খেলাতেই এগোতে পারিনি। স্কুলে তাইকোন্ডো খেলায় আমি অংশগ্রহণ করি। তাইকোন খেলার জন্য প্রশিক্ষক থাকলেও অর্থের অভাবে একসময় তাও বন্ধ হয়ে যায়। তারপর একাই প্র্যাকটিস চালিয়ে যেতে থাকি। খেলার জন্য কিটের প্রয়োজন হয়। বাবা চাষবাস করে যতটুকুনি উপার্জন করে তা দিয়ে কোনওরকমে সংসার চালায়। তার পক্ষে খেলাধুলা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনা।
সরকারি সাহায্যের প্রার্থনা
রেখা জানায়, সরকারি যদি কোনও সাহায্য পাওয়া যায় তাহলে আগামী দিনে আমি আমার খেলাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। ভবিষ্যতে অলিম্পিকে অংশ নিয়ে ভারতের নাম উজ্জ্বল করতে চাই। বাবা রাজু তুড়ি বলেন, ‘মেয়ে ছোট থেকেই পড়াশোনার সঙ্গে খেলাধূলা চালিয়ে যেত। কিছুটা দূর এগনোর পরেই আর সেভাবে মেয়েকে সাহায্য করতে পারেনি। এরপর সে নিজেই চেষ্টাতেই নিজের খেলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। আমি চাই মেয়ে আরো অনেক দূরে যাক।’