স্পেনে যাওয়ার পথে দুবাই বিমানবন্দরে আচমকাই বিক্রমসিঙ্ঘের সঙ্গে দেখা হয়েছিল মমতার। প্রাথমিক সৌজন্য বিনিময়ের পর বিক্রমসিঙ্ঘে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, ‘আপনিই কি বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন?’ জবাবে মমতা হেসে বলেন, ‘সেটা দেশের মানুষের উপরে নির্ভর করছে।’ এই কথোপকথনকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অন্য ভাবে উপস্থাপন করেন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে। মমতা এবং বিক্রমসিঙ্ঘের মুখে কাল্পনিক সংলাপ বসানো হয়। যেখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎকে কার্যত কটাক্ষই করা হয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তৃণমূলের অভিযোগ, শুভেন্দুর এই পোস্ট ভারত-শ্রীলঙ্কার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও অযথা জটিলতা তৈরি করবে। ডেরেকের বক্তব্য, ‘শুভেন্দুর এই কাল্পনিক পোস্ট আসলে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলার বাণিজ্যিক সম্পর্ককে নষ্ট করার চেষ্টা।’ বিদেশমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে ডেরেক উল্লেখ করেছেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের বহু বছরের সুসম্পর্ক রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেন্দুর এই পোস্ট শ্রীলঙ্কায় থাকা ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ভাবাবেগেও আঘাত করছে। ডেরেক বিদেশমন্ত্রীকে লিখেছেন, যে ভাবে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে কটাক্ষ করেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক, তা ভারতের বিদেশনীতির পরিপন্থী। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের বিদেশনীতির বিরোধী পোস্ট করে বিধায়ক পদের অপব্যবহার করেছেন শুভেন্দু। ডেরেকের কথায়, ‘ঘরোয়া রাজনীতির বিরোধের মধ্যে কখনও ভিন দেশের রাষ্ট্রনেতাকে টানা যায় না। শুভেন্দু সে কাজটাই করেছেন। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’
বিদেশ মন্ত্রক যাতে এর প্রকাশ্যে নিন্দা করে, সেই দাবিই তুলেছে তৃণমূল। এ বিষয়ে শুভেন্দু কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে রাজ্য বিজেপি’র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য মনে করছেন, তৃণমূল নেতাদের মধ্যে রসবোধের অভাব দেখা দিয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে অযথা জলঘোলা করছেন। শমীকের কথায়, ‘রাজনীতি থেকে টিপ্পনি, রসিকতা হারিয়ে গেলে রাজনীতি আরও নিষ্প্রাণ হয়ে উঠবে। তৃণমূলের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে, তারা কার্টুন আঁকাও তুলে দিতে চায় রাজ্য থেকে।’ তাঁর সংযোজন, ‘ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া হয়। কিন্তু প্রতিক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া হয় না।’