নিকাশি সংস্কারের কাজ করতে গিয়ে বেহাল দশা হয়েছে রাস্তার। মেয়রের নির্দেশ, পুজোর আগেই সমস্ত ভাঙা রাস্তা সারিয়ে ফেলতে হবে। তার জন্য বরাদ্দ হয়েছে কয়েকশো কোটি টাকা। সেই কাজের দায়িত্ব কারা পাবে, তা নিয়েই পুরসভার অন্দরে শুরু হয়েছে জোর কাজিয়া। তার মাঝে পড়ে শাঁখের করাতের মতো দশা হয়েছে পুরসভার অফিসারদের। পুরসভা সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর ধরেই কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পে টালিগঞ্জ, যাদবপুর এবং বেহালার সংযোজিত এলাকায় (১৬, ১৩, ১১ নম্বর বরোর অধীন) বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিকাশি সংস্কারের কাজ চলছে। তার জন্য রাস্তা খুঁড়ে বড় বড় পাইপলাইন বসানো হচ্ছে। পুরো কাজটাই হচ্ছে এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের ঋণের টাকায়।
যার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে কলকাতা পুরসভারই অধীনস্থ সংস্থা কেইআইপি (কলকাতা এনভায়রনমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রোজেক্ট)। এই কাজ করতে গিয়ে দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় রাস্তার কার্যত বারোটা বেজে গিয়েছে। তার ফলে মানুষের যাতায়াতের খুব অসুবিধা হচ্ছে। এটা নিয়ে এলাকার মানুষের ক্ষোভ বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা মেরামতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। সাধারণত, কেইআইপি যেখানে নিকাশি সংস্কারের কাজ করে পাইপ লাইন বসে যাওয়ার পর তারাই রাস্তা মেরামত করে দেয়।
কিন্তু কেইআইপি কাজে গড়িমসি করায় সেই দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হয়েছে পুরসভার হাতে। তবে রাস্তা মেরামতের সমস্ত খরচ বহন করবে কেইআইপি। কারণ, রাস্তা মেরামতের খরচ নিকাশি সংস্কার প্রকল্পের মধ্যেই ধরা আছে। সেই মতো মেয়রের নির্দেশ মেনে রাস্তা সংস্কারের দায়িত্ব স্থানীয় বরো অফিস এবং পুরসভার রোডস ডিপার্টমেন্টের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়। মৌলালি অফিসে কেইআইপি’র মিটিংয়ে মেয়র নির্দেশ দিয়েছিলেন, সাত মিটারের বেশি চওড়া রাস্তা হলে সেখানে মেরামতির কাজ করবে পুরসভার রোডস বিভাগ।
তার নীচে হলে করবে বরো অফিস। কিন্তু কয়েক দিন আগে টালিগঞ্জের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস কেইআইপি এবং পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে আলাদা মিটিং করে জানিয়ে দেন, তিন মিটার পর্যন্ত করবে বরো। তার বেশি হলে রোডস বিভাগ করবে। সেই খবর কানে আসতেই শুক্রবার মেয়র অফিসারদের সাফ জানিয়ে দেন, তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাই কার্যকর হবে।
অন্য কারও নির্দেশ মানা হবে না। মেয়রের যুক্তি, কাজটা যাতে দ্রুত হয়, তার জন্যই তিনি রোডস বিভাগের পাশাপাশি বরোগুলোকেও এই কাজে যুক্ত করেছেন। অরূপ বলেন, ‘আমার সঙ্গে মেয়রের সঙ্গে কোনও মতবিরোধ নেই। রাস্তা সারানোর ব্যাপারে মেয়র যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তাঁকে আমি সাধুবাদ দেব।’ তিনি জানিয়েছেন, রাস্তার মাটি এখন নরম আছে বলে আপাতত পাতলা একটা লেয়ার দিয়ে রাস্তায় গাড়ি চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে। জানুয়ারি মাস থেকে পার্মানেন্ট রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হবে।