শান্তিনিকেতনের অনন্য সম্মান
১৯২১ সালে শান্তিনিকেতনে মানবতার ঐক্যকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়’। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে বিরাজমান ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের অভিমুখ এবং ইউরোপীয় আধুনিকতা থেকে আলাদা শিক্ষার অভিমুখ শিখিয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়।
কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
মুখ্যমন্ত্রী এদিন টুইট করে জানান, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে আমরা গত ১২ বছরে এর পরিকাঠামোতে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি ঘটিয়েছে বিশ্ব এখন ঐতিহ্যবাহী স্থানের গৌরবকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যারা বাংলাকে, ঠাকুরকে এবং তাঁর ভ্রাতৃত্বের বার্তাগুলিকে ভালবাসেন তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ। জয় বাংলা, প্রণাম গুরুদেবকে।’
শান্তিনিকেতনের ইতিহাস
শান্তিনিকেতন মূলত বিশ্ববিদ্যালয় শহর হিসেবে পরিচিত সকলের কাছে। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা নির্মিত একটি আশ্রম ছিল এখানে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে যে কেউ এসে এক পরম ঈশ্বরের ধ্যানে সময় কাটাতে পারতেন ‘ শান্তিনিকেতনে।’ পরে নোবেল জয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি এবং কার্যকলাপের প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে এই শান্তিনিকেতন।
রবি ঠাকুরের কর্মস্থল
জানা যায়, ১৮৬৩ সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রায়পুরের জমিদার ভুবন মোহন সিংহের কাছ থেকে দুটি ছাতিম গাছসহ ২০ একর জমি ইজারায় কিনেছিলেন। তিনি একটি অতিথিশালা তৈরি করেছিলেন এখানে। নাম রেখেছিল ‘শান্তিনিকেতন’। সেখান থেকেই গোটা অঞ্চলটি শান্তিনিকেতন হিসেবে পরিচিত পায় সকলের কাছে। জ্ঞান, সংস্কৃতি, শিল্পের তীর্থস্থান হয়ে ওঠে এই শান্তিনিকেতন। পরবর্তীকালে ১৭ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে আসেন। ১৯০১ সালে রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে একটি ব্রহ্মাচার্জ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।
শুভেচ্ছা বিভিন্ন মহলে
শান্তিনিকেতনের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুভেচ্ছা জানানো শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে টুইট করে শান্তিনিকেতনের এই অনন্য সম্মানে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২১ এর আগস্ট মাসে বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন পরিদর্শনে আসে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির একটি প্রতিনিধিদল। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতেই ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায় নাম উঠল শান্তিনিকেতনের। বিশ্বভারতীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান, ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন তাঁরা। বিশ্বভারতীর পুরাতত্ত্ব বিভাগ এর কাজ প্রায় এক বছর ধরে চলার পর নবরূপে বিশ্বভারতীকে উপস্থাপনা করে কর্তৃপক্ষ। সংরক্ষণ ও সংস্কারের পরিকল্পনা প্রয়োগকে প্রতিনিধিদলের সামনে তুলে ধরাই ছিল বিশ্বভারতীর প্রধান উদ্দেশ্য। অবশেষে বিশ্বভারতী মুকুটে চাপল সেই স্বীকৃতি। এবার ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায় নাম উঠল বিশ্বভারতীর।