ষষ্ঠী থেকে লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত বুকিং মোটামুটি ভালো। কিন্তু তার পরে আবার ফাঁকা। দীপাবলির সময়ে কিছুটা ভিড় থাকবে। অথচ পুজোর বুকিং মানে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে চলে সেই বড়দিন পর্যন্ত। মূলত দুটি কারণে এই অবস্থা বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। দু’টি বিমান সংস্থার বাগডোগরা হয়ে যাতায়াত অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। ফলে ফেরাটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ার ভয়ের ভিনরাজ্যের পর্যটকেরা উত্তরবঙ্গে আসতে ভয় পাচ্ছেন। তা ছাড়া দুটি বিমান সংস্থার অনুপস্থিতির জেরে বিমান ভাড়া অসম্ভব বেড়ে গিয়েছে। বাগডোগরা-আমেদাবাদের যাতায়াতের ভাড়া ১৭ হাজার টাকার কাছাকাছি। যেখানে বারো হাজার টাকায় দুবাই পৌঁছে যাওয়া সম্ভব।
আরও একটি কারণ রয়েছে, সেটা হলো অনেকেই পুজোর চারটে দিন, বিশেষত অষ্টমীর দিন অঞ্জলি দিতে পুজো মণ্ডপে যেতে চান। পাহাড়ে সেটা সম্ভব কি না তা নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা রয়েছে অনেকের। পর্যটন ব্যবসায়ীদের কাছে ঘন ঘন ফোন আসছে এই ব্যাপারে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘এখনও বুকিং ভালো নয়। আবার খারাপও নয়। বেশির ভাগ বুকিং হোমস্টেতে। এমনটা কিন্তু হয় না। আমরা ঠিক করেছি, পাহাড়ে পর্যটকদের পুজো মণ্ডপে ঘোরানোর ব্যবস্থা রাখব। পর্যটকদের সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
পুজোতে উত্তরবঙ্গে মূলত তিন ধরনের পর্যটক বেড়াতে আসেন। রাজ্যের পর্যটকেরা আকাশে পেঁজা মেঘ দেখলেই বাক্সপ্যাঁটরা গোটাতে শুরু করেন। মাঙ্কি টুপি থেকে বিয়ের শাল, কিছুই বাদ পড়ে না। ভিনরাজ্যের পর্যটকেরা আসেন। আর আসেন বিদেশিরা। বিদেশিরা পুজোর পরে মূলত বড়দিনকে সামনে রেখে পাহাড়ে আসেন। ইদানীং বাংলাদেশি নাগরিকরাও প্রচুর সংখ্যায় পাহাড়ে আসছেন। তবে তাঁদের বেশির ভাগের পছন্দ মূলত পাহাড়ের বর্ষা। সেই কারণে এ বার গরমের পরে বর্ষার মরশুমেও পাহাড়ে প্রচুর পর্যটক ছিল।
পুজোয় ট্রেনের বুকিং হয়েছে দেদার। কিন্তু দার্জিলিংয়ের হোটেল, লজ, রিসর্টে বুকিং তেমন আহামরি নয়। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সন্দীপন ঘোষও বুকিংয়ের হাল দেখে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘গরমের সময়ে এত ভালো ব্যবসার পরে পুজোর বুকিংয়ের হাল কেন এত খারাপ সেটা আমাদেরও মাথায় ঢুকছে না। দার্জিলিংয়ে বুকিং ৩৫ শতাংশ হলে সিকিমে তাও নেই। বিমান ভাড়া একটা কারণ হতেই পারে। আবার এমনও হতে পারে যে পর্যটকেরা শেষ মুহুর্তে বুকিং করতে পারেন।’