মৃত ছাত্রের নাম অনুশঙ্কর মণ্ডল (১৪)। কাকদ্বীপের বামানগর সুবলা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। থাকত স্কুলেরই হস্টেলে। দুপুরে হস্টেলের ছাত্রদের খাওয়াদাওয়ার পর থেকেই অনুশঙ্করের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। হস্টেল সুপার তারাপদ জানা হস্টেলের বিভিন্ন ঘরে খোঁজ করেন। শেষে স্কুলের তিনতলার একটি ক্লাসরুমে অনুশঙ্করের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে কাকদ্বীপ থানার পুলিশ স্কুলে আসে। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কুলতলির বাসিন্দা অনুশঙ্করের পরিবারকে খবর পাঠানো হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণি থেকে বামানগর সুবলা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ছে অনুশঙ্কর। তদন্তে উঠে এসেছে অনুশঙ্করকে রবিবার হস্টেলের বাথরুমে খৈনি হাতে দেখতে পান স্কুলের নিরাপত্তারক্ষী গোবিন্দ সর্দার। তিনি অনুশঙ্করকে নিয়ে যান হস্টেল সুপারের ঘরে। হস্টেল সুপার এই বয়সে নেশা না করার কথা বলেন।
যদিও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রটি খৈনি খাওয়ার কথা স্বীকার করেনি। অনুশঙ্কর দাবি করে, খৈনি হাতে নিলেও সে মুখে দেয়নি। হস্টেল সুপার তারাপদ জানা বলেন, ‘আজ সকালে হস্টেলের রান্নাঘর থেকে ফেরার সময়ে নিরাপত্তারক্ষী গোবিন্দ সর্দার আমায় জানায় এক ছাত্র খৈনি খেতে গিয়ে ধরা পড়েছে। আমি ওকে লিখিত দিতে বলি। হেড স্যরের কাছেও নিয়ে যাওয়ায় কথা বলেছিলাম।’
এরপর দুপুরে হস্টেলের সকলের সঙ্গে খেতে বসে অনুশঙ্কর। তখন তার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকত্ব দেখেনি সহপাঠীরা। কিন্তু খাওয়াদাওয়ার পর থেকেই আর অনুশঙ্করকে দেখতে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি জানতে পেরে খোদ হস্টেল সুপার তারাপদ জানা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। হস্টেলে কোথাও না পেয়ে শেষে কয়েকজন ছাত্রকে নিয়ে স্কুল বিল্ডিংয়ে খোঁজ করতে যান।
স্কুলের তিন তলার একটি ক্লাসরুমে সিলিং ফ্যান থেকে অনুশঙ্করের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান সকলে। তড়িঘড়ি তাকে নামিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলদেব বেরা বলেন, ‘আমি হস্টেল সুপারের কাছে জানতে পেরেছি, নেশা করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল ছেলেটি। সুপার গার্জেন কলের কথা বলেছিলেন। তা ছাড়া যা ঘটেছিল, তা কাগজে লিখে দিতে বলেছিলেন। এইটুকুই কথা হয়েছিল। তারপরেই ও আত্মহত্যা করে।’
শান্ত স্বভাবের অনুশঙ্করকে সকলেই খুব ভালোবাসতেন। অনুশঙ্করের পরিবার একসময় সোনারপুরে থাকত। পরে কুলতলি চলে যায়। অনুশঙ্কর কাকদ্বীপের হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছিল।