নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য প্রশাসন চলে থ্রি-টায়ার সিস্টেমে। সবার উপরে রয়েছে সেক্রেটারিট। তার নীচে রয়েছে ডাইরেক্টরেট এবং রিজিওনাল অফিস। এর মধ্যে সবথেকে বেশি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে সেক্রেটারিয়েটের কর্মীরা। সেক্রেটারিয়েট বিভাগে পদের সংখ্যা বেশি বলে চাকরিতে পদোন্নতির সুযোগও অনেক বেশি। সে তুলনায় ডাইরেক্টরেট এবং রিজিওনাল অফিসের কর্মীদের পদোন্নতির সুযোগ কম।
সেই বৈষম্য দূর করতেই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের মধ্যে একটা সমতা আনার চেষ্টা করবে। নবান্নের খবর অনুযায়ী, সেক্রেটারিয়েট দপ্তরে স্পেশাল সেক্রেটারি, জয়েন্ট সেক্রেটারি, ডেপুটি সেক্রেটারি, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারির মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ রয়েছে।
সেখানে একজন সাধারণ সরকারি কর্মী লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক থেকে আপার ডিভিশন ক্লার্ক, তারপর হেড অ্যাসিস্ট্যান্ট, সেখান থেকে সেকশন অফিসার অথবা রেজিস্ট্রার পদে উন্নীত হয়। পরবর্তী ধাপে তারা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি, ডেপুটি সেক্রেটারি, জয়েন্ট সেক্রেটারি এবং স্পেশাল সেক্রেটারি পদে প্রমোশন পাচ্ছেন।
সেখানে ডাইরেক্টরেটে হেড অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে বড়জোর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার পদে উন্নীত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। রিজিওনাল অফিসের একজন হেড ক্লার্ক খুব বেশি হলে অফিস সুপারিন্টেডেন্ট হতে পারেন। সেক্রেটারিয়েট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে এবং ডাইরেক্টরেট ও রিজিওনাল অফিসের কর্মীদের এই বৈষম্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ জানিয়ে আসছিল বিভিন্ন কর্মচারি সংগঠন।
এ নিয়ে কোর্টে মামলাও হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে কর্মীদর মধ্যে বৈষম্য দূর করতে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ডিএ বঞ্চনা নিয়ে সরকারি কর্মীদের মধ্যে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে নিচুতলার কর্মীদের পদোন্নতির সুযোগ তৈরি হলে তাতে কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়বে।
তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশনের প্রবীণ নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা অনেক আগেই সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আমরা চাই, কর্মীদের মধ্যে সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে একটা সামঞ্জস্য থাকুক। সেক্রেটারিয়েট বিভাগে মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজার স্টাফ আছে। আর রিজিওয়াল এবং ডাইরেক্টরেট স্টাফ আছে আড়াই লাখ কর্মী রয়েছে। তাই তাদের কথাও সরকারের ভাবা উচিত।’