কিছুদিন আগে মন্দারমণির সমুদ্র সৈকতে এক অর্ধনগ্ন তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়। মৃতার নাম জানা যায় লাবণী দাস। তড়িঘড়ি সুয়োমোটো মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। লাগাতার তদন্তে এবার সাফল্য এল। এখনও পর্যন্ত পুলিশ সূত্রে যা জানা যাচ্ছে, নদিয়ার তাহেরপুরের বাসিন্দা লাবনী দাস কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তাঁর দিদির বিয়ে হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে। পরিবারের পাশে আর্থিকভাবে দাঁড়াতে সোদপুরে একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতে যেতেন লাবণী। সেই জন্য দিদির বাড়িতেও প্রায়শই যাতায়াত ছিল তাঁর। ওই যাতায়াতের ফলেই দিদির দেওর প্রলয় দাসের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে লাবণী। ক্রমে সেই প্রেম গভীর হয়।
কলকাতায় এক অ্যাপ ক্যাব সংস্থায় চালক হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিল প্রলয়। সেই কারণে দমদমে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত সে। প্রায় প্রতি শুক্রবারই বিউটি পার্লারে কাজ শেখার নাম করে দমদমে প্রলয়ের সেই ভাড়া বাড়িতে যাতায়াত করলেন লাবণী। সেই সময় শারীরিক সম্পর্কও হয়েছে উভয়ের মধ্যে। এরপর বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে লাবণী। এদিকে ইতিমধ্যেই অন্য একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে প্রলয়। বিষয়টি লাবণীর কানে পৌঁছতেই শুরু হয় অশান্তি। বিবাদ নিষ্পত্তির জন্যই লাবনীকে মন্দারমণিতে নিয়ে যায় প্রলয়। তারপর সেখানে শ্বাসরোধ করে লাবণীকে খুন করাহ বলে অভিযোগ। তারপর প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ সমুদ্র সৈকতে ফেলে দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে আরও খবর, প্রলয়ের এক বন্ধু তাপস জানার বাড়ি মন্দারমণি এলাকায়। তার বুদ্ধিতেই দেহ ফেলে রাখা হয়েছিল মেরিন ড্রাইভে। ঘটনার পর থেকে পলাতক সেই তাপসও।
যদিও, প্রলয়ের সঙ্গে এই সম্পর্কে কথা তাঁরা জানতেন না বলেই দাবি পরিবারের সদস্যদের। এই বিষয়ে মৃতার দিদি বলেন, ‘আমার পরে জানতে পেরেছি। যখন ওর (লাবণীর) খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না, যখন শুনলাম ও আর নেই, তখন ওর বন্ধুবান্ধবীদের থেকে জানতে পারলাম। ও বিউটি পার্লারে যাচ্ছে বলত, সেটাই বিশ্বাস করতাম।’ দেওরের কড়া শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন লাবণীর দিদি। অন্যদিকে ঘটনায় রামনগরের ডিএসপি-ডি অ্যান্ড টি রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন,’আমরা আজকে আদালতে তুলব, তারপর রিমান্ডে নিয়ে জানতে পারব আসল ঘটনাটা কী।’ ঘটনায় আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে বলেই মনে করছেন ডিএসপি-ডি অ্যান্ড টি।