হাওড়া-রাঁচি বন্দে ভারত উদ্বোধনের আগেই স্টপ নিয়ে তৈরি হলো বিতর্ক। সেমি হাই-স্পিডের এই ট্রেনটি দাঁড়াবে পুরুলিয়া জেলার পুরুলিয়া ও কোটশিলা স্টেশনে। পুরুলিয়া নিয়ে না থাকলেও বন্দে ভারতের স্টপ নিয়ে কোটশিলার নাম ঘোষিত হতেই ভ্রু কুঁচকেছেন অনেকে। তাঁদের মতে, ঝালদা একটি পুর শহর ও ব্যবসাকেন্দ্র। এই জায়গা বাদ দিয়ে কোটশিলার মতো আপাত জনবিরল একটি জায়গা বন্দে ভারতের স্টপ হিসেবে বেছে নেওয়া হলো কেন? রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এর পিছনে রাজনীতি দেখছে। তাদের অভিযোগ, ঝালদায় (বাঘমুন্ডি বিধানসভা) জয় পেয়েছে তৃণমূল, উল্টো দিকে কোটশিলায় (জয়পুর বিধানসভা) জিতেছে বিজেপি। এই সমীকরণেই বন্দে ভারতের ঝুলি থেকে বাদ পড়েছে ঝালদা।
আজ রবিবার রাঁচি-হাওড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। তার আগে ঝালদা শহর তৃণমূল সভাপতি চিরঞ্জীব চন্দ্র বলেন, ‘পুরুলিয়ার পর এই জেলায় রেলের সব থেকে বেশি আয় হয় ঝালদায়। এখানে ট্রেনের প্রয়োজন থাকলেও বন্দে ভারত দাঁড়াবে না। যেহেতু বিধানসভা নির্বাচনে এখানে তৃণমূল জয়ী হয়েছে তাই চক্রান্ত করে ঝালদাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’ ঝালদা যে বিধানসভার অন্তর্গত সেই বাঘমুন্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোর বক্তব্য, ‘ঝালদা মহকুমা শহর। জেলার অন্যতম বাণিজ্যকেন্দ্র। বন্দে ভারতের স্টপ হলে খুব ভালো হতো।’ এ নিয়ে তাঁর তরফ থেকে রেলের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে জানিয়ে বিধায়ক বলেন, ‘আগামী দিনে যাতে ট্রেনটি এখানে থামে তার জন্য সবরকমের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
বন্দে ভারতের দাবিতে সরব হয়েছেন ঝালদার ব্যবসায়ীরাও। স্থানীয় ব্যবসায়ী মনোজ রুংটা অবিলম্বে স্টপের দাবি করে বলেন, ‘ঝালদা থেকে রাঁচি এবং কলকাতা যাওয়ার প্রচুর যাত্রী রয়েছেন। এখানে ট্রেনের স্টপ হলে খুব সুবিধা হতো। কোটশিলার মতো স্টেশনে স্টপ দিয়ে কী লাভ হলো বুঝলাম না।’ এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো বলেন, ‘বন্দে ভারতের মতো প্রিমিয়াম ট্রেনের স্টপ খুব বেশি করা সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে দু’টি স্টপ এই জেলা পেয়েছে।’
কোটশিলা রেল জংশন, এখানে পুরুলিয়া ও বোকারোর লাইন এসে মিশেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোটশিলা থেকে ট্রেন ধরা সহজ। এছাড়া তুলিনের পাশে ঝাড়খণ্ডের মুরিতেও স্টপ রয়েছে। ফলে এলাকার মানুষের সমস্যা হবে না।’ তবু তিনি পরবর্তী সময়ে ঝালদায় স্টপ করা নিয়ে চেষ্টা করবেন বলে জানান। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্যকুমার চৌধুরী জানান, অনেকগুলি বিষয়ের উপর স্টপ নির্ভর করে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে এ নিয়ে প্রস্তাব আসে। রেলের আয় সমেত বিভিন্ন বিষয় দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান তিনি।