পঞ্চায়েত প্রধান হামিদুল খান বলেন, ‘প্রধান হল একটি প্রশাসনিক পদ। শুধু পদে বসলেই হয় না, প্রধান হিসেবে মানুষেরা যে কারণে আপনাকে নির্বাচিত করেছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা একজন প্রধানের দায়িত্ব ও কর্তব্য।’ যেখানে বর্তমান সময়ে নানা বিষয়ে বিরোধীরা তৃণমূল সরকারের তীব্র সমালোচনা করছেন, সেখানে শাসক দল থেকেই নবনির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধানের ভূমিকায় দারুণ খুশি এলাকাবাসী।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট ব্লকের সিদ্ধা ২ গ্ৰাম পঞ্চায়েত থেকে নবনির্বাচিত প্রধান হামিদুল খান এবার অনন্য ভূমিকায়। প্রথমবার প্রধান নির্বাচিত হয়ে তিনি নানা কর্মসূচির মাধ্যমে এলাকার মানুষদের কাছের হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। কখনও কোদাল হাতে মাথায় গামছা বেঁধে, কখনও ‘দুয়ারে সরকার’-এ মানুষের পাশে থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, এমনকী বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গিয়ে মানুষকে নানা সুবিধা দেওয়া থেকে মানুষের অভাব অভিযোগ শোনা সবেতেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে দেখা গিয়েছে তাঁর প্রধানকে। তবে প্রধানের এই ভূমিকায় খুশি এলাকাবাসী।তারা জানিয়েছেন, এভাবে কখনও আমরা হয়তো কোনও প্রধানকে দেখিনি।
প্রধান মানুষের প্রয়োজনে সবসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় তাঁকে সহজেই সমস্ত অভাব অভিযোগ জানায়। বার্ধক্য ভাতা, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, রেশন , ইন্দিরা আবাস যোজনা সহ নানা বিষয় নিয়ে তারা অভিযোগ করেন এবং তা দ্রুত মেটানোর আশ্বাস দেন প্রধান। শুধু তাই নয় প্রধানের উদ্যোগে এই পঞ্চায়েত এলাকায় দুটি নতুন প্রকল্পের সূচনা করেন প্রধান। তিনি জানান, ‘ এই ‘এক ফোনে প্রধান’ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বুথে বুথে প্রতিটি বাড়িতে যাচ্ছি এবং একটি কাগজ প্রদান করছি ,যাতে প্রধানের নাম ও ফোন নম্বর রয়েছে । যে কোনও সময় , যে কোনও প্রয়োজনে মানুষের আমাকে প্রয়োজন হলে জানাতে পারেন এবং আমি চেষ্টা করব মানুষের পাশে থাকার।’
এছাড়াও ‘দুয়ারে প্রধান’ প্রকল্পের মাধ্যমেও তিনি জানিয়েছেন, ‘প্রতি সপ্তাহে অন্তত একদিন তিনি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসবেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ নানা বিষয়ে মানুষকে সুবিধা দেবেন। তিনি জানান, এলাকায় অনেক অসুস্থ ও বয়স্ক মানুষ আছেন, যাদের পক্ষে অফিসে যাওয়া সম্ভব নয়। তাদের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ।’ এছাড়াও প্রধান পঞ্চায়েত এর সমস্ত সদস্যদেরও এলাকার মানুষদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন। বুথে বুথে গিয়ে মানুষের সমস্যা জানা ও তা দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা ও নিতে বলেছেন।
এখানেই শেষ নয়, এছাড়াও প্রধান টোটোয় চড়ে এলাকার মানুষজনদের নানা বিষয়ে বার্তা দেন। ডেঙ্গি রুখতে এলাকাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে । শুধু প্রচারই নয়, প্রধান নিজে কোদাল হাতে এলাকা পরিষ্কারের কাজে সর্বদা সচেষ্ট থাকেন । এর মাধ্যমে তিনি এলাকার পুজো কমিটি, জলসা কমিটি সহ মানুষদের এলাকা, রাস্তাঘাট পরিষ্কারের কাজে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানানকেউ এই কাজে বাধার সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বলেও আশ্বাস দেন। তিনি জানান, ‘একজনের অসুবিধায় একশো জন বিপদে পড়ুক এমন কোনও কাজ হবে না। তাই সবাই এগিয়ে আসুন একটি স্বচ্ছ গ্ৰাম পঞ্চায়েত গড়ে তুলতে।’ প্রধানের এই উদ্যোগে স্বভাবতই খুশি পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটি মানুষজন। প্রধানের এই উদ্যোগকে তারাও সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং প্রতিটি পরিস্থিতিতে তারা এভাবেই যাতে প্রধানকে পাশে পান সেই বিষয়ে তারা জানিয়েছেন এবং প্রধানও পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।