অথচ এত দিন কাক-পক্ষীতেও টের পায়নি। তদন্তে বিষয়টি জানাজানি হতেই ওই কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ। তাকে সাসপেন্ড করেন জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবমশী। সপ্তাহখানেক আগে জেলার সিভিক ভলান্টিয়ারদের মাসিক ভাতার হিসেব মেলাতে গিয়ে আর্থিক গরমিল নজরে আসে খোদ পুলিশ সুপারের।
তদন্তে উঠে আসে, জেলার থানাগুলিতে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়াররা লিভ নিলেই, তাঁদের মাসোহারার মধ্যে সেই দিনগুলির টাকা সফটওয়্যার জালিয়াতি করে নিজের বেশ কিছু আত্মীয়ের অ্যাকাউন্টে জমা করে দিত অভিযুক্ত। গত সাড়ে চার বছরে ওই কনেস্টবল সাড়ে নয় লাখ টাকা এ ভাবে আত্মসাৎ করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে।
তবে এই টাকার পরিমাণ আরও বেশি বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। কারণ সাড়ে চার বছরে জেলার কোন থানায় মাসে কত জন সিভিক ভলান্টিয়ার কাজে অনুপস্থিত ছিলেন, সেই রোস্টার মেলানোটা সময় সাপেক্ষ বিষয়। তাই অযথা তাড়াহুড়ো না করে, ওই আর্থিক দুর্নীতির মূলে পৌঁছতে চাইছেন এসপি।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে জেলা পুলিশের অন্দরে তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়েছে। ওই কনস্টেবলের সাহস দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছেন দুঁদে পুলিশ কর্তারা। সাধারণত, ওই সফটওয়্যারের পাসওয়ার্ড পুলিশ সুপারের অনুমতি ছাড়া ব্যবহারই করার কথা নয়। অথচ নিজে ক্যাশ ক্লার্ক হওয়ার সুবাদে এত দিন ধরে তা ব্যবহার করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে দীপঙ্কর সরকারের বিরুদ্ধে।
জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবমশী বলেন, ‘প্রতি মাসে জেলার প্রায় সাড়ে চার হাজার পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভাতা আমার অফিস থেকে বণ্টন হয়। নাম ধরে ধরে যা আমার পক্ষে মেলানো অসম্ভব। কিন্তু সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপস্থিতির তালিকা মেলাতে গিয়েই আমার চোখ আটকায়। কারণ তাঁদের সংখ্যার সঙ্গে টাকার পরিমাণ কিছুতেই মিলছিল না। তারপরেই নিঃশব্দে তদন্ত চালানোয় আর্থিক তছরুপের বিষয়টি সামনে আসে। সোমবার ধৃত কনেস্টবলকে আদালতে পেশ করে তদন্তের স্বার্থে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।’