কুলীনগ্রাম হল পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ব্লকের আবুজহাটি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একটি প্রাচীন জনপদ। পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে এই গ্রামেই মালাধর বসু জন্মগ্রহণ করেন। তার পৌত্র রমানন্দ বসু ছিলেন চৈতন্যদের খুবই অন্তরঙ্গ। বসু পরিবারের আমন্ত্রণেই চৈতন্যদেব কুলীনগ্রামে এসে ছিলেন খ্যাতি আছে। শ্রীচৈতন্য দেবের আবির্ভাবের কিছুকাল আগে পূর্ব বর্ধমানের কুলীনগ্রামের ভূমি পুত্র মালাধর বসু এই কাব্য রচনা করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে স্বয়ং শ্রীচৈতন্য দেব কুলীনগ্রামে এসে তিন দিন থাকেন বলে উল্লিখিত রয়েছে চৈতন্যমঙ্গল কাব্যে। তাই কুলীনগ্রাম শ্রীচৈতন্য দেবের পদধূলিতে ধন্য বৈষ্ণব তীর্থস্থান হিসাবেই দেশ জুড়ে পরিচিতি পেয়ে আসছে।
এহেন কুলীনগ্রামই এবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নিতে চলেছে। রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ কুলীনগ্রামের বিভিন্ন মন্দির ও বৈষ্ণব মঠ ঘুরে দেখার পর সেই কথাই ঘোষণা করলেন। স্বাভাবিকভাবেই মন্ত্রীর এই ঘোষণা স্বাভাবিকভাবেই খুশি কুলীনগ্রামের বাসিন্দারা।
বসু পরিবার কুলীন গ্রামে যে রথযাত্রা উৎসবের সূচনা করেছিলেন সেই রথযাত্রা উৎসব পালনে কোন ছেদ পড়ে নি আজও। শুধু জগন্নাথ দেবের পুজো পাঠই নয় ,কুলীন গ্রামে আরো আনেক দেব দেবীর মূর্তি ও মন্দির রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল রাজা বল্লাল সেনের আমলে তৈরি গোপাল মন্দির। গোপাল মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি বড় জলাশয় যা গোপাল দিঘি নামে পরিচিত। এই দিঘিতে স্নান করা গঙ্গা স্নানের সমতুল্য বলে ভক্তরা মনে করেন। প্রতিবছর রথযাত্রা এবং জন্মাষ্টমী তিথিতে ভক্তের ঢল নামে এই কুলীন গ্রামে। ওই দিন গুলিতে এই রাজ্য ছাড়াও দেশ ও বিদেশের বহু ভক্তরাও আসেন কুলীন গ্রামে।
তবে বৈষ্ণব তীর্থ স্থান কুলীন গ্রামকে পর্যটন স্থান হিসাবে মান্যতা দেওয়া হোক এই দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করে অসছেন এলাকাবাসীরা। আর এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের পর্যটন দফতরও উৎসাহ দেখানোয় এদিন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ কুলীন গ্রামে যান এবং বিভিন্ন এলাকার ঘুরে দেখেন। স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী গ্রামীণ টুরিজম সেন্টার গড়তে চান। সরকারে আর্থিক সংকট থাকলেও কুলীন গ্রামকে পর্যটন স্থান হিসাবে গড়ে তোলার যাবতীর কাজের প্ল্যান তৈরি হয়ে গিয়েছে। ইন্দ্রনীল সেন ও আমি বিষয়টি দেখছি। রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে খুব শীঘ্রই কুলীনগ্রাম জায়গা করে নিয়ে চলেছে। ‘