বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা অনিল সিং। এক বা দু’বার নয়, তিন-তিনবার বিধানসভা ভোটের প্রার্থী হয়েছেন বিজেপির প্রতীকে। এমনকি বীরভূম জেলা বিজেপির সহসভাপতি পদের দায়িত্বভারও সামলেছেন। এহেন অনিল সিংকেই প্রায় এক বছর আগে দল বিরোধী কার্যকলাপের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এবার তিনিই বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি তথা রাজ্যস্তরের নেতা অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। একইসঙ্গে বীরভূম সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি ধ্রুব যুব সাহাকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, ‘বীরভূম জেলার চিটফান্ডের নেতা ধ্রুব সাহার দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি বারবার লিখেছিলাম, তাই আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। জেলা সভাপতি হওয়ার আগে তার কোনও সম্পত্তি ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে জেলার দ্বিতীয় অনুব্রত মন্ডল হয়ে গেলেন।’
এই বিষয়ে অনিল সিং সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘যা পোস্ট করেছি তা একদম বাস্তব। তৃণমূলের লোকেরা এখন ধ্রুব সাহাকে ঠিকা দিয়ে দিয়েছে। বিজেপি যাতে তৃণমূলের কাজ করে তার জন্য। আর তাই এখন অনুব্রত মণ্ডল জেলে থাকলেও তাঁর ভূমিকাটা বিজেপির জেলা সভাপতি পালন করছে। অনুব্রত মণ্ডল জেলে যাওয়ার পরে রয়্যালটির ঠিকাটাও এখন বীরভূম জেলা বিজেপির সভাপতি নিয়েছেন। যার জন্য এত পরিমাণে অর্থ রোজগার করছেন, যা রাখার জায়গা পাচ্ছেন না। তাই রামপুরহাটে জায়গা কিনছেন। দলের ছত্রছায়ায় থেকে দলকে শেষ করে দেবে, সেটা তো হয় না।’
ধ্রুব সাহার বিরুদ্ধে সরব
এছাড়াও বহিস্কার প্রসঙ্গে অনিল বলেন, ‘আমি তো অন্যায় কিছু করিনি, আমি শুধু বারবার সরব হয়েছি ধ্রুব সাহার বিরুদ্ধে। দলের শাসন থাকা দরকার। কিন্তু দল সেই রাস্তায় এগোয়নি। যার জন্য দেখা গেল, এই বাজে লোকটাকে জেলা সভাপতি করা হল। স্বাভাবিকভাবেই এখন এটা বোঝা যাচ্ছে দল আর দলের জায়গায় নেই। দল তোলাবাজির জায়গায় চলে গিয়েছে। দল তো এদেরকে তোলাবাজি করার জন্য রাখেনি, কিন্তু রাজ্যে এমন কিছু লোক বসে আছে যার মধ্যে অমিতাভ চক্রবর্তী এদেরকে সুযোগ দিচ্ছেন। তিনি প্রত্যেক জেলায় এদের মতো একটা করে লোককে রেখে দিয়েছেন, আর বলেছেন তোমরা তোলাবাজি করো, আর অর্থের ভাগ পাঠাও। সেটা আমরা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি আর সেই অর্থ দিয়েই জেলা সভাপতি প্রচুর সম্পত্তি কিনেছে। যে সম্পত্তির কিছু তথ্য আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছি। যদি এগুলি সত্য না হয়, তিনি আদালতে যান, মামলা করুন।
জবাব দিলেন ধ্রুব
এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ধ্রুব সাহা বলেন, ‘কিছু লোক তৃণমূলের হাতে হুকো খায়। দিনের বেলায় বিজেপি দেখায়, রাতের বেলায় ভাইদের সঙ্গে তৃণমূলের হয়ে বিজেপিকে শেষ করার গল্প করে। এই রকমই একজন আছেন, যাঁর আমি নাম নিতে চাই না। মোদীজির এত কিছু কাজ চলে, কিন্তু কোনওদিন তাঁকে সেই বিষয়ে কিছু পোস্ট করতে দেখা যায় না। এমনকী তৃণমূলের বিরুদ্ধেও কোনদিন তাঁকে লিখতে দেখা যায় না। আমি সাইবার ক্রাইমে মামলা করেছি। মান সম্মান আমার হানি হয়েছে, তাই এক কোটি টাকার মামলা করব। আমার ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সাইবার স্ক্যানারদের হাতে তুলে দিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ করেছি। আইনি যত রকমের প্রক্রিয়া আছে সব রকম হবে। আমার উকিল তার উত্তর দেবে।’