তিনি বলেন, ‘কেন্দুয়া গ্রামের রাত পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে আমরা পাখিদের রক্ষা করা নিয়ে দফায় দফায় মিটিং করেছি। তাঁরাও অনেক সহযোগিতা করেছেন। স্থানীয় যে বনসুরক্ষা কমিটি রয়েছে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে রাত পাহারার চেষ্টা করছি। রাত এগারোটা থেকে ভোর সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ৮ জন বনকর্মীকে রোটেশন অনুযায়ী ডিউটি দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের দু’টো সার্চলাইট দেওয়া হয়েছে। আরও আট থেকে দশটি সার্চ লাইট দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’
বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ‘এই সময়’ পত্রিকায় এই প্রতিবেদন প্রকাশের পরেই নড়ে চড়ে বসে ঝাড়গ্রাম বনবিভাগ। গ্রামবাসী দুবরাজ মাহাতো, সঞ্জয় প্রামাণিক, হরেন মাহাতো বলেন,‘এই সময় পত্রিকায় বিষয়টি তুলে ধরার জন্যই তাড়াতাড়ি রাত পাহারার ব্যবস্থা হলো। পত্রিকার সকলকে ধন্যবাদ। বনদফতর আমাদের ডাকে সাড়া দেওয়ায় পাখিরা এ বার চোরাশিকারিদের হাত থেকে বেঁচে যাবে। ওদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা দূর হলো।’
তিন দশক আগে কেন্দুয়া গ্রামে যতীন মাহাতোর বাড়ির চত্বরে থাকা দু’টি তেঁতুল গাছে ডেরা বাঁধে পাখির ঝাঁক। ধীরে ধীরে আশপাশের প্রায় আট-দশটি গাছে আস্তানা গড়ে ওঠে পাখিদের। মূলত শামুকখোল এলেও, এখানে দুধরাজ, জ্যোৎস্ন বক, মোহনচূড়ার মতো একাধিক পাখির দেখা মেলে। অতিথি পাখিদের আগলে রাখতে কেন্দুয়ার বাসিন্দারা চেষ্টা করলেও চোরাশিকারিদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় চিন্তা হচ্ছিল সকলের।
দিনের বেলা চোখে চোখে রাখলেও রাতে চোরাশিকারিদের আটকানো সম্ভব হচ্ছিল না। কেন্দুয়া গ্রামের বাসিন্দা দুবরাজ মাহাতো বলেন, ‘একটু দেরিতে হলেও বনদফতরের টনক নড়েছে। রাতে বনকর্মীদের দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করেছে। গ্রামে সার্চ লাইটও দিয়েছে। দিনের বেলায় গ্রামবাসীরা সবসময় নজরদারি করে। কিন্তু রাত এগারোটা থেকে ভোর তিনটে পর্যন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। গ্রামবাসীরা ঘুমিয়ে পড়লেই চোরাশিকারিরা এসে পাখিদের বস্তায় ভরে নিয়ে চলে যাচ্ছিল। রাতের ওই সময়টুকু পাহারা থাকলেই আমরাও নিশ্চিন্ত।’