Uttar 24 Pargana : হালিশহরের ছাদে বাগানে রাশি রাশি পদ্ম, ফলছে আঙুরও – many lotuses in the garden on the roof of halisahar and grapes are also fruiting


অশীন বিশ্বাস, হালিশহর

কালবৈশাখীর মেঘ, বিশ্বকর্মার ঘুড়ির লড়াই বা শীতের দুপুরের আচার-বড়ি শুকোনোর রোদ- সবেরই ঠিকানা ছিল একফালি ছাদ। কিন্তু ফ্ল্যাটবাড়িতে অবহেলায় পড়ে থাকে বারোয়ারি ছাদ। নিজের বাড়ি থাকলেও ব্যস্ত জীবনে দিনের পর দিন ছাদের সিঁড়িতে পা পড়ে না কারও। এই ছবিটাই বদলে গিয়েছিল করোনার সময় দমবন্ধ লকডাউনে। দিনের পর দিন ঘরে বন্ধ থাকতে থাকতে মানুষ আবার ছাদে ভিড় করেছিল।

কেউ কেউ আগেও শখে ছাদ বাগান করলেও, করোনার সময় থেকে তার প্রবণতা বেড়ে যায় বহুগুণ। এমনই দুই ছাদের সন্ধান মিলল শহরের উপকণ্ঠে, উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরে। একজন অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী, আর একজন বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক। হালিশহরের দুই প্রান্তে বাড়ি দু’জনের। দু’জনেরই উদ্দেশ্য, বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করা এবং গাছের সংখ্যা বাড়ানো।

Fish Kabiraji : ফ্রাই-কবিরাজিকে অন্য স্বাদ দিতে বাজারে আসছে গিফ্ট তেলাপিয়া
সেই লক্ষ্যেই একজন বাড়ির ছাদে আঙুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। আর একজন বাড়ির ছাদে প্রায় ১৩৮ রকমের পদ্ম চাষ করছেন। হালিশহরের দুই বাসিন্দা অরুণ কুমার নাথ এবং মানিক দেবনাথ। ছোট্ট এক চিলতে জমিতে বাড়ির ছাদেই ম্যাজিক দেখাচ্ছেন দু’জন। হালিশহর স্টেশন লাগোয়া পূর্বাচলের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী অরুণ কুমার নাথ বাড়ির ছাদে চাষ করছেন অন্ধ্রপ্রদেশের কালো মিষ্টি আঙুর।

নাথবাড়ির ছাদ জুড়ে ছেয়ে গিয়েছে অন্ধ্রের অর্কতৃষ্ণা প্রজাতির আঙুরের লতা। ঝুলছে থোকা থোকা আঙুর। বৃদ্ধ বয়সেও পরিচর্যায় কোনও খামতি নেই অরুণের। মুখে মুখে প্রচারে বাড়িটি এখন আঙুর বাড়ি হিসেবেই পরিচিত। প্রায় প্রতিদিনই আঙুরের চারা নিতে ভিড় জমান সাধারণ মানুষ। চারাটি প্রথমে বিনামূল্যে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন অরুণ। কিন্তু এখন টাকার বিনিময়ে গাছ বিক্রি করেন। তাঁর কথায়, ‘টাকা দিয়ে কিছু কিনলে তার মর্যাদা বেশি থাকে। তাই দেড়শো টাকায় একটি চারা দিই।’

Bardhaman News : ছাদে শুকোতে দেওয়া কাপড় পেঁচিয়ে গেল গলায়! বর্ধমানে ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু
আঙুরের চাষ শুরু করেছিলেন ১৯৮০ সালে। তখন তাঁর পোস্টিং ছিল ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার ভোজুডিতে। অত্যধিক গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার জন্য এক সহকর্মীর থেকে আঙুর গাছের ডাল নিয়ে পুঁতেছিলেন। ২০ বছর ধরে সেখানে আঙুর চাষ করার পর ২০০০ সালে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে ওই একই প্রজাতির আঙুরের ডাল নিয়ে হালিশহরের বাড়িতে এসে লাগান। আঙুর বেশি হলে রাস্তায় বেরিয়ে সাধারণের মধ্যে বিলিয়ে দেন বৃদ্ধ।

হালিশহর পুরাতন বারুইপাড়ার বাসিন্দা বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক মানিক দেবনাথ বাড়ির ছাদে তৈরি করে ফেলেছেন পদ্ম বাগান। ছোট বড় ড্রামে দেশ বিদেশের ১৩৮ রকম প্রজাতির পদ্মের চাষ করছেন তিনি। ওই তালিকায় দেশি প্রজাতির আখিলা, হোয়াইট মিরাকল, অদিতি যেমন রয়েছে, তেমনই গ্রিন অ্যাপল, কামিল্লা, জোরাসিক রেড, ডি নাইন, ময়ূরী, স্বর্ণ কুমুদের মতো ভিন্ন প্রজাতির পদ্মগাছও রয়েছে।

Nursing Student : ভিডিয়ো কল কাটেন প্রেমিক! ছাদে মিলল নার্সিং পড়ুয়ার দেহ
ভিয়েতনাম থেকে আরও ১১টি প্রজাতি, থাইল্যান্ড থেকে ১০টি এবং অস্ট্রেলিয়ার আরও দু’টি প্রজাতির বায়না দিয়েছেন তিনি। পদ্মের টবে মশার উপদ্রব ঠেকাতে গাপ্পি, মলি, প্ল্যান্টি জাতীয় মাছ ছাড়া রয়েছে। শখের বাগান। তাই কেউ চাইলেও তিনি ফুল কিংবা পদ্মের পাতা বিক্রি করেন না। তবে হংকংয়ের দু’টি নার্সারি এবং বাংলাদেশের চারটি নার্সারিতে চারা বিক্রি করেছেন তিনি।

এই ধরনের ছাদবাগানের ভিডিয়ো আপলোড করে আয় করছেন অনেক ভ্লগার। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপ ভরে থাকে অরুণ বা মানিকের মতো এমন ছাদ বাগানিদের ফসলে।

https://whatsapp.com/channel/0029Va9zh58Gk1Fko2WtDl1A



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *