ক্লান্তিতে ধানের জমিতেই ঘুমিয়ে পড়েন। বৃষ্টি আর কাদার মধ্যে রাত তিনটে নাগাদ তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। হাঁটতে হাঁটতে চলে আসেন কাছেই নোটা গ্রামে। সেখানে নোটা থেকে টাটাগামী একটি যাত্রিবাহী বাস দাঁড়িয়েছিল। বাসে কোনও যাত্রী ছিল না। এমনকী চালক ও খালাসিও ছিলেন না। ওই ফাঁকা বাসের ছাদে উঠে ফের ঘুমিয়ে পড়েন অভিযুক্ত। শনিবার সকালে আলো ফুটতেই নেমে পড়েন বাসের ছাদ থেকে।
স্থানীয় এক গ্রামবাসীকে দেখে ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে চায়ের দোকান কোথায় জানতে চান অমরজিৎ। পরনের পোশাক ও কথায় সন্দেহ হওয়ায় গ্রামেরই এক এনভিএফ কর্মীকে ঘটনার কথা খুলে বলেন ওই ব্যক্তি। তারপর বেলিয়াবেড়া থানার পুলিশ এসে বাসটি ঘিরে ফেলে গ্রেফতার করে অমরজিৎকে। শুক্রবার বিকেলে বেলিয়াবেড়া থানার পাইকাম্বি গ্রাম থেকে প্রকাশ কুমার, নবীন কুমার, গৌরব সিং, রোশন কুমার, সুজিত কুমারকে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ পাকড়াও করেছিল।
কিন্তু পলাতক ছিলেন অমরজিৎ সিং। শনিবার ভোরে তাঁকেও গ্রেপ্তার করে তুলে দেওয়া হয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের হাতে। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন,’শুক্রবার পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হলেও অমরজিৎ সিং পলাতক ছিল। শনিবার ভোরে তাঁকে গ্রেফতার করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আইনি বিষয়টি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
খুব কম সময়ের মধ্যে ডাকাত দলে থাকা ছ’জনকে গ্রেফতার করায় পুলিশের ভূমিকায় খুশি ব্যবসায়ীরা। খড়্গপুর স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিক্রম রাও বলেন, ‘পুলিশের ভূমিকায় আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। খড়্গপুরে এরকম ঘটনা আগে ঘটেনি। ছোট-বড় সব মিলিয়ে খড়্গপুরে প্রায় ১৭০টি গয়নার দোকান রয়েছে। আগামী সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি মিটিং ডাকা হচ্ছে। শুধু পুলিশের উপর নির্ভর না থেকে নিজেদেরও সিকিউরিটির কথা ভাবতে হবে। দোকানে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো সহ সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।’
বিক্রম রাও বলেন, সারা দিনে দু’তিনবার পুলিশের বাইক বাহিনী শহরে টহল দিলে ভালো হয়। তাহলেই দুষ্কৃতীদের কাজকর্ম অনেকটা কমে যাবে। কোনও অপরাধ ঘটাতে একবার ভাববে।’ তবে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়রা কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে খড়্গপুর শহরে ঢুকে পরিত্যক্ত রেল কোয়ার্টারে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।