এমন পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে সমস্ত জেলার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে ভার্চয়ালি বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে,বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি এবং হাওড়ার জেলা শাসক, পুলিশ কমিশনার সহ উচ্চ পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির জন্য কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে সেই নিয়ে সোমবারই বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ ত্রিবেদী। এছাড়া ওই মিটিংয়ে উপস্থিত থাকবেন নিকাশি ব্যবস্থা, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সহ বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ কর্তারা।
নবান্ন তরফ মুখ্য সচিব শুনিয়েছেন আরও বড় আশঙ্কার কথা। ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট অর্থাৎ মৌসম বিভাগ ৩ অক্টোবর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত একটানা ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ভারী নিম্নচাপটি এই মুহূর্তে অবস্থান করছে ঝাড়খণ্ডে। ভারী বৃষ্টির জেরে বাড়ছে জল স্থল। ড্যাম উপছে যাওয়ারর আশঙ্কায় ক্রমাগত মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ছাড়া হচ্ছে জল। এর জেরে চিন্তার ভাঁজ এরাজ্যের কপালে।
জানা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ মাইথন থেকে ৩০ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৫০ হাজার কিউসেক সমেত মোট ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। তারপরই ১২ ঘণ্টাও হতে না হতেই সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ আবারও দুই জলাধার থেকে এক লাখ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে এরাজ্যেও চলছে দফায় দফায় বৃষ্টি। উপরন্তু দফায় দফায় মাইথন ও পাঞ্চেৎ জলাধার থেকে জল ছাড়ায় বেড়েছে এরাজ্যের জলস্তরও। ফলে বৃষ্টির সঙ্গে দফায় দফায় জল ছাড়া বানভাসি অবস্থা সাত জেলার। পুজোর আগে যেকোনও ধরনের বিপর্যয় এড়াতে আগেভাগেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন। নবান্নের তরফে সেচ ও জলবিভাগ ডিভিসির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। একইসঙ্গে পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে প্রশাসন। যদিও তাতেও মিটছে না আশঙ্কা।
বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত নবান্নের নির্দেশিকা
প্রশাসনের তরফে স্থানীয় সমস্ত আধিকারিকদের শীঘ্রই সাত জেলায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের সতর্ক করার কথা বলা হয়েছে। রাজ্যের নিম্ন অববাহিকা অঞ্চল বিশেষত হাওড়া ও হুগলিতে মানুষকে সতর্ক করে উঁচু জায়গায় সাময়িকভাবে চলে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। বন্যা বা নদীর বেড়ে যাওয়া জলস্তর রুখতে বালির বস্তার মতো জিনিসও তৈরি রাখতে নির্দেশ প্রশাসনের। বানভাসি এলাকায় যাতে শীঘ্র সাহায্য ও ত্রাণ সামগ্রীও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় 24×7 নজর রাখার জন্য কন্ট্রোল রুম ইতিমধ্যেই খোলা হয়েছে। প্রতি পাঁচ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টি ও পুরো পরিস্থিতির রিপোর্ট বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে দেওয়া হবে।