উন্নয়নের নামে প্রকৃতির উপরে আক্রমণ করেছি আমরা, উত্তরবঙ্গে গিয়ে সরব রাজ্যপাল


নারায়ণ সিংহ রায়: তিস্তার ভয়াল বন্যার বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের বিরাট অংশ। দশ নম্বর জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। শিলিগুড়ি সংলগ্ন বহু জায়গায় প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত জনজীবন। সেবক ও কালীঝোরার মাঝে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে নতুন করে ধস নেমেছে। পরিস্থিতি দেখতে দিল্লি থেকে সোজা সেখানে পৌঁছে গেলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।

আরও পড়ুন-বিপর্যস্ত সিকিমে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪, এনজেপিতে আটকে বহু পর্যটক

এলাকার পরিস্থিতি প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে খোঁজ নেন রাজ্যপাল। বন্যার কবলে পড়ে কতজন কোথায় আটকে রয়েছেন, তাঁদের উদ্ধারের কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন সি ভি আনন্দ বোস। এর পাশাপাশি সংবাদমাধ্য়মের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যপাল বলেন, এলাকার বড়পা বানের জেরে যে পরিস্থিতি হয়েছে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। চারদিকে ধস নেমেছে, যানবাহন বন্ধ হয়ে গিয়েছে, বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ। আমাকে বলা হয়েছে দুর্গত বহু মানুষ রিলিফ ক্যাম্প থেকে ঘরে ফিরেছেন। এটা খুব ভালো খবর। সরকার পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে। রাজ্য সরকার, কেন্দ্র সরকার ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সম্ভাব্য যা করার তা করবে।

এলাকার যে পরিস্থিতি তার একটি স্থায়ী সমাধান ও আগাম প্রস্তুতির কথা বলতে গিয়ে রাজ্যপাল বলেন, আমরা যা মনে হয়, এখানকার নদীগুলির গতিপ্রকৃতির উপরে একটি সমীক্ষার প্রয়োজন। এরকম বিপর্যয় থেকে যাতে রক্ষা পাওয়া যায় তার একটা আগাম ব্যবস্থার প্রয়োজন। এলাকার আরও বেশকিছু জায়গা ঘুরব যাতে পরিস্থিতি খানিকটা বুঝতে পারি। রিলিফ ক্যাম্পে যাঁরা রয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা বলব।  তার কী অবস্থায় রয়েছেন দেখতে চাই। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উপরে বহু সমীক্ষা হয়েছে। এনিয়ে কেন্দ্রের দায়িত্বেও ছিলাম। এরকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেশের বহু জায়গায় হচ্ছে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, দুর্ঘটনাবশত দুর্ঘটনা হয় না। তার পেছনে কারণও থাকে। বড় কারণ হল, আমরা প্রকৃতির উপরে অত্যাচার করতে শুরু করে ফেলেছি। উন্নয়ণের নামে আমরা প্রকৃতিক ভারসাম্যের উপরে হামলা চালাচ্ছি। তাই উন্নয়ণের সঙ্গে প্রাকৃতির একটা ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।

কেউ কেউ বলেছেন আপনি এখান টুরিস্ট। কী বলবেন? রাজ্যপাল বলেন,হ্যাঁ  আমি ট্যুরিস্ট। মন্ত্রিসভায় আমার কিছু জুনিয়র অ্যাপয়েন্টি যদি ট্যুরিস্ট হিসেবে আমরা সঙ্গী হতেন তাহলে ভালো হতো।

উল্লেখ্য, সিকিমে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৪। নিখোঁজ ১০২ এবং আহত ২৬ জন।  নিখোঁজ জওয়ানদের মধ্যে এখনওপর্যন্ত ১ জনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সিকিম সরকার ২২টি ত্রাণ শিবির তৈরি করেছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ২০১১ জন। সিকিমে নিহত ১৪ জনের মধ্যে গ্যাংটকে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের, মঙ্গনে ৪ জন এবং পাকিয়ংয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭ জন। দশ নম্বর জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গা ভেঙে গিয়েছে। ফলে যাতায়ত ব্য়বস্থা বিচ্ছিন্ন। সবেমিলিয়ে মেঘভাঙ বৃষ্টি, বাঁধভাঙা হড়পা বানে বিপর্যস্ত সিকিম।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *