Presidency University Canteen : প্রেসিডেন্সি নয়, তবে কলেজ পাড়ায় প্রমোদের প্রত্যাবর্তন! – presidency university iconic canteen owner pramod is back in college campus


এই সময়: ৮৬/১ কলেজ স্ট্রিটের স্থায়ী ঠিকানা থেকে তিনি উৎখাত হয়েছেন ছ’বছর হয়ে গেল। বহু আন্দোলন, আবেদন-নিবেদন, লেখালিখি করেও মন গলানো যায়নি কর্তৃপক্ষের। প্রেসিডেন্সির বহু দশকের আইকনিক ক্যান্টিন পরিচালক প্রমোদ সাঁইকে ফিরে যেতে হয়েছে ওডিশার কটকে, তাঁর দেশের বাড়িতেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার অধিকার নেই তাঁর। ফেরত দেওয়া হয়নি তাঁর লক্ষাধিক টাকার জিনিসপত্রও।

প্রেসিডেন্সির ছাত্র-শিক্ষক-প্রাক্তনীদের প্রিয় সেই ‘প্রমোদদা’ আবার ফিরলেন কলেজ পাড়াতেই। ফেরা অল্প সময়ের জন্য, তবু তাঁকে ঘিরে প্রেসিডেন্সিয়ানদের উৎসাহ প্রবল। ঘটনা হলো, কলেজ স্ট্রিটের অদূরেই বিধান সরণীতে বিদ্যাসাগর কলেজের উলটোদিকে ব্রাহ্মসমাজ ভবনে চলছে ‘হস্তশিল্প ও পর্যটন মেলা’। এই মেলার আয়োজকদের কেউ কেউ প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী।

West Bengal School : স্কুলের ব্র্যান্ডিং হোক সোশ্যাল মিডিয়ায়, চাইছে শিক্ষা দফতর
তাঁদের হাত ধরেই প্রমোদদার সাময়িক পুনর্বাসন সম্ভব হয়েছে। চার দশকের বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্সিতে ক্যান্টিন চালানো প্রমোদের জৌলুস এখন নেই। আছে বলতে শুধু একটি কফি মেশিন আর তাঁকে ঘিরে থাকা বহু মানুষের ভালোবাসা। আর্ট পেপার কেটে তাতে রং পেন্সিল দিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে লেখা হয়েছে ‘প্রমোদদার ঠেক’। মেলার অছিলায় সেই ঠেকেই প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন বহু মানুষ।

শুক্রবারই যেমন এসেছিলেন প্রেসিডেন্সির একদল পড়ুয়া ও প্রাক্তনী। প্রমোদদার হাত থেকে কফি খেতে খেতে তেমনই সদ্য এক প্রাক্তনী সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘ছাত্রজীবনের কত স্মৃতি প্রমোদদার ক্যান্টিনে। তার টানেই প্রমোদদার সঙ্গে দেখা করতে আসা। প্রেসিডেন্সির পড়ুয়া সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান প্রমোদদাকে ঘিরে থাকা অজস্র কাহিনী। প্রাক্তনী হিসেবে তা রক্ষা করা আমার দায়।’ সেই দায় অনুভবের থেকে এসেছিলেন অহন কর্মকারও।

পরীক্ষায় ফেল করার আশঙ্কা, চিকিৎসক বাবার প্রেসারের ওষুধ খেল সাউথ পয়েন্টের পডুয়া! তারপর…
তাঁর কথায়, ‘প্রমোদদা আমাদের কাছে কেবল একজন ক্যান্টিন পরিচালক নন। কলেজে প্রথম দিন পা দিয়েই শুনেছিলাম তিনটে পি-এর কথা। প্রেম, পলিটিক্স আর প্রমোদদা। সেই টানেই এখানে আসা।’ এমনও অনেক প্রাক্তনী আসছেন যাঁদের সঙ্গে প্রমোদের দেখা হয়েছিল কয়েক দশক আগে। ঠাট্টার ছলেই কেউ কেউ প্রমোদদাকে ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন সেই কলেজ জমানায় ধার করে খাওয়া চা-কফির দাম।

‘৬ টাকা ২৫ পয়সা ধার ছিল গো প্রমোদদা… এই নাও।’ আড্ডা দিতে দিতে হাল্কা চালেই বলে উঠলেন এক প্রাক্তনী। প্রমোদ পাল্টা হাসি ফিরিয়ে তাঁর হাতে একটা কফির কাপ ধরিয়ে বলেছেন, ‘ত্রিশ বছর আগের ধার। সুদে আসলে তো এখন অনেক হয়েছে..।’ প্রমোদদার অবশ্য মন ভালো নেই। অবসাদ ঘিরে ধরে তাঁকে। ছেলের চাকরি আর নিজের জমানো কিছু সম্পদে তাঁর খাওয়া-পরার সমস্যা নেই।

Manik Saha Dental Surgery: হাতে অপারেশনের ছুরি-কাঁচি! নিজের ছাত্রের অস্ত্রোপচার মুখ্যমন্ত্রী মানিকের
কিন্তু প্রমোদের কথায়, ‘এতগুলো বছর যে ক্যান্টিন চালিয়েছি, কত ছেলেমেয়েকে বড় হতে দেখেছি। ওদের হাসি, কান্না, মন খারাপ, ঝগড়া, ভালোবাসা দেখতে দেখতেই বুড়ো হয়েছি। এখন শত চেষ্টা করেও তা দেখতে পাই না। সেই কারণেই মন ভালো থাকে না।’ তবে এই মেলায় এসে মন ভালো হয়েছে তাঁর। রবিবার পর্যন্ত এই মেলায় থাকছে বাংলাদেশের নকশিকাঁথা থেকে জামদানি, সিল্ক, সোনাঝুড়ির হাতের কাজ থেকে মেদিনীপুরের পটচিত্র-সহ আরও অনেক রকমের সম্ভার। সেখানেই দেখা মিলবে প্রমোদদারও। আর প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী এবং পড়ুয়াদের রিইউনিয়ন আড্ডারও।

https://whatsapp.com/channel/0029Va9zh58Gk1Fko2WtDl1A



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *