Bonedi Bari Durga Puja : মায়ের চোখের জল মোছাতে শুরু দেবীর আরাধনা, চমকপ্রদ ইতিহাস নন্দকুমারের এই দুর্গাপুজোর – purba medinipur byabattarhat village bonedi barir durga puja with traditional rituals


প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ বছর আগেকরা কথা! নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাটে এক মহিলা পাশের গ্রামে দুর্গাপুজোয় অঞ্জলি দিতে যান। জাতের দোহাই দিয়ে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় সেখান থেকে। চোখে জল নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। মায়ের অপমান সহ্য করতে পারেননি ছেলে। মা দুর্গার আরাধনায় উঁচু নিচু জাত আবার কীসের? মায়ের চোখের জল মোছাতেই শুরু হয় দুর্গাপুজো।

Durga Puja 2023 : মা দুর্গার মৃন্ময়ী রূপ গড়েন নিজের হাতে, ‘উৎসব সবার’ বলেন নূর মহম্মদ
কী জানা যাচ্ছে?

ব্যবত্তারহাটে বাসিন্দা স্বার্থকরাম তাঁর মায়ের চোখের জল মোছাতে চিন্ময়ী মায়ের আরাধনা শুরু করে। স্বার্থকরাম ছিলেন তাম্রলিপ্তি অধুনা তমলুকের রাজা তাম্রধবজ রাজার ব্যবস্থাপক। স্বার্থকরামের মা বাড়ির অদূরে একটি পুজোয় গিয়েছিলেন সেখানে অপমানিত করা হয়। মা বাড়িতে ফিরে কান্নাকাটি করা মায়ের চোখের জল দেখে বাড়িতে শুরু হয় চিন্ময়ী মায়ের আরাধনা। সেই থেকে আজও নন্দকুমারের ব্যবত্তাহাটের ব্যবত্তাবাটিতে হয়ে চলেছে মায়ের পুজো।

Bengali Durga Puja 2023 : পরাধীনতা থেকে স্বাধীনতা, ৩০০ বছর বুকে নিয়ে বালিসাই ভুঁইঞাগড়ের জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো
ব্যবত্তাবাটির বনেদিপুজো

নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাটের ব্যবত্তাবাটির বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজো। আর এই বনেদি বাড়ির পুজো শুধু বাড়ির পুজো নয় এলাকার মানুষের প্রাণের পুজো আদি ও প্রাচীন পুজো। নিয়মনিষ্ঠা মেনে আজও এই ব্যবত্তাবাটির পুজো চলে আসে। পুজোর প্রথম প্রচলন করেছিলেন এই পরিবারের পূর্বপুরুষ স্বার্থকরাম। স্বার্থকরাম ছিলেন তাম্রলিপ্ত অধুনা তমলুকের রাজা তাম্রধ্বজ রাজার রাজপরিবারের ব্যবস্থাপক। এই ব্যবস্থাপক থেকেই এই এলাকার নাম হয় ব্যবত্তারহাট।

Durga Puja 2023 : মুসলিম ধর্মবলম্বীর হাতে ধ্বজা উড়িয়ে সূচনা, চুড়ামন রাজবাড়ির দুর্গাপুজো সম্প্রীতির মিলনক্ষেত্র
প্রতিটা প্রাচীন বনেদি বাড়ির দুর্গা পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পুজো শুরুর ইতিহাস। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুজো শুরুর ইতিহাসে দেবীর স্বপ্নাদেশের কথা উঠে আসে। কিন্তু এই পুজোর প্রচলন কোনও স্বপ্নাদেশ থেকে নয়। মানবী মায়ের চোখের জল মোছাতে চিন্ময়ী দেবী মায়ের আরাধনা শুরু হয়।
বর্তমান সময়ে থিমের রমরমা থাকলেও প্রাচীন সাবেকি পুজোয় মানুষের ঢল নামে। এখনে নিয়ম নিষ্ঠা মেনে পুজো হয় বলেই দূর দূরান্তে মানুষ পুজোয় ভিড় জমান। জন্মাষ্টমীর পরের দিন নন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে এক কিলোমিটার দূরে পুরানো ব্যবত্তাহাটে পতিতা পল্লির মাটি নিয়ে এসে মায়ের প্রতিমা গড়া হয়। সেই থেকে ব্যবত্তাবাটিতে পুজো শুরু হয়ে যায়।

কৃষকদের অধিকার নিয়ে ৩৯ পল্লী-র মণ্ডপে এবার কোন চমক?

একজোট হয় পরিবার

পরিবারের সদস্যরা সকলে ভিন রাজ্য, ভিন দেশে কর্মসূত্রে বাহিরে থাকলেও পুজোর সময় সকলে বাড়ি ফিরে আসে। পুজোর কয়েকটা দিন পরিবারের সদস্য ও আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষকে সাথে নিয়ে পুজোর কয়েকটা দিন মেতে ওঠে। মাকে বিভিন্ন পদ দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়৷ তবে এই বাড়ির মায়ের ভোগে থাকে বিভিন্ন ধরনের বড়ি। এখন থেকেই পরিবারের মহিলারা পুজোর প্রস্তুতিতে মেতে উঠেছে। নবীন ও প্রবীণদের মিলিত প্রয়াসে আজও ব্যবত্তাবাটির পুজো জমজমাট। এখনও পুজোর কয়েকটা দিন এলাকার প্রায় এক হাজার মানুষ প্রতিদিন ভোগ গ্রহণ করে থাকে।

নতুন খবর প্রতি মুহূর্তে পেতে এই সময় ডিজিটাল হোয়াটস্যাপ চ্যানেল। ক্লিক: https://whatsapp.com/channel/0029Va9zh58Gk1Fko2WtDl1A



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *