এমনই অভিযোগ উঠল নিউ টাউনের কারিগরি ভবন লাগোয়া একটি অভিজাত আবাসনে। অভিযোগ, আবাসনের এক বাসিন্দাকে মারধর করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। পুলিশ ও ওই আবাসন সূত্রের খবর, ২১ তলা, ৫১টি টাওয়ারের ওই আবাসনে কয়েক হাজার পরিবারের বসবাস। আবাসনের পরিকাঠামো উন্নয়ন, মেরামতি ইত্যাদি খাতে প্রায় ৬০ কোটির টাকা বাজেট ধার্য করেছে বর্তমান পরিচালন সমিতি।
এর জন্য প্রতিটি ফ্ল্যাট মালিককে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই টাকা দিতে না পারলেই ফ্ল্যাটের দরজায় বারবার হানা দিচ্ছেন ওই আবাসনের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা। এমনকী যাঁদের টাকা বাকি, আবাসনে তাঁদের বাড়ির পরিচারিকা, গাড়ির চালকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে প্রতিবাদ করেন আবাসনের বাসিন্দা, পেশায় চিকিৎসক প্রবীণ কুমার।
অভিযোগ এর জেরে প্রবীণের ঘরের দরজায় বারবার নক করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। দরজায় ধাক্কা মারা হয়। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহারও করা হয়। তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁকে ফ্ল্যাট থেকে বের করে এনে বেসমেন্টে মারধর করেন ১০-১২জন নিরাপত্তারক্ষী। পরে তাঁকে উদ্ধার করে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫ অক্টোবর এই ঘটনা ঘটে।
পরের দিনই তিনি টেকনো সিটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। শনিবার পাল্টা প্রবীণের বিরুদ্ধে এইআইআর করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁর মারে এক নিরাপত্তারক্ষীর দাঁত ভেঙেছে, এই অভিযোগ করা হয় পুলিশের কাছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আবাসনের এক বাসিন্দা জানান, পরিচালন সমিতি যা খুশি, তাই করছে। পুরোনো নিরাপত্তারক্ষীদের পাল্টে গত বছর অন্য এজেন্সিকে বরাত দেওয়া হয়েছে।
ওই নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে ঘুরিয়ে গুন্ডাগিরিও করা হচ্ছে। রবিবার সন্ধ্যায় এর প্রতিবাদে ওই আবাসনের বাসিন্দারা মোমবাতি মিছিল করেন। প্রতিক্রিয়া জানার জন্য আবাসন কমিটির সভাপতি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব।’ এই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই ওই আবাসনের পরিচালন সমিতির কয়েকজন সদস্য পদত্যাগ করেছেন।
তাঁদেরই একজন বলেন, ‘যেটা ঘটেছে, খুবই নিন্দনীয় ব্যাপার, আমরা একে সমর্থন করছি না। তবে মোমবাতি মিছিলকেও সমর্থন করছি না। পরিচালন সমিতিকে ছোট করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এমনটা করা হচ্ছে।’